
যে কারণে কাপ্তাই হ্রদে বাড়ছে নৌ দুর্ঘটনা
ডুবে থাকা গাছে ধাক্কা লেগে সম্প্রতি ২ পর্যটকের মৃত্যু
জিয়াউর জুয়েল , এখন টিভি
১৫ মার্চ ২০২৩, ১৬:১১
ডুবোচর আর গাছের গুঁড়ির কারণে কাপ্তাই হ্রদে নৌ দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। প্রায়ই ডুবোচরে আটকে যাচ্ছে পর্যটকবাহী নৌ-যান। ডুবে থাকা গাছের গুড়িতে ধাক্কা লেগে সম্প্রতি প্রাণ হারিয়েছেন দুই পর্যটক। গত তিন বছরে মারা গেছেন ৭ জন। এমন অবস্থায়, ডিসিবাংলো এলাকায় গাছের গুড়িতে লাল কাপড় ও বয়া স্থাপনে উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
হ্রদের শহর রাঙামাটিতে প্রতিদিন-ই দেশের নানা প্রান্ত থেকে ভ্রমণে আসছেন পর্যটকরা। সবুজ প্রকৃতি আর নীল জলের সান্নিধ্য পেতে পর্যটকদের প্রথম পছন্দ হ্রদে নৌ-ভ্রমণ। কিন্তু মাঝে মাঝে সেই আনন্দে বিষাদের ছোঁয়া লেগে যাচ্ছে। নৌ দুর্ঘটনায় বিরূপ অভিজ্ঞতা আর স্বজন হারানো ব্যাথা নিয়েই ফিরতে হচ্ছে অনেককে।
শীত মৌসুমে হ্রদের পানি কমলে কাপ্তাইয়ে জেগে ওঠে অসংখ্য ডুবোচর। ধারণক্ষমতার বেশি যাত্রী বহন আর চালকদের অসতর্কতায় প্রায়ই নৌ-যান আটকে যায় এসব ডুবোচরে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি ডুবোচরে আটকা পড়েন এমন ১৭৫ জন পর্যটক। পরে তাদের উদ্ধার করে পুলিশ।
সর্বশেষ ২০ ফেব্রুয়ারি ডিসি বাংলো এলাকায় ডুবে থাকা গাছের গুঁড়ির সঙ্গে ধাক্কা লেগে নৌ-ডুবিতে প্রাণ হারান দুই নারী পর্যটক। এসময় জীবিত উদ্ধার করা হয় ৬২ জনকে।
নৌযান চলাচল নিরাপদ রাখতে বিপজ্জনক গাছের গুড়ি অপসারণ ও সবগুলো ডুবোচর চিহ্নিত করে লাল পতাকা স্থাপনের দাবি সংশ্লিষ্টদের।
স্থানীয়রা বলেন, ‘এখানে ঘুরতে এসে অনেকেই গাছের গুড়ির কারণে দুর্ঘটনার শিকার হন। তাই এগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করা গেলে এমন দুর্ঘটনা আর হবে না।’
প্রাণহানীর পর তৎপর হওয়া বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে দুর্ঘটনাস্থলে একটি বয়া স্থাপন করেছে। আর ১১টি গাছের গুঁড়ি চিহ্নিত করে লাল পতাকা স্থাপন করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ যাত্রি পরিবহন সংস্থা রাঙামাটি জোন। কাপ্তাই হ্রদে নৌ চলাচলের পথে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান বিআইডব্লিউটি 'এর কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ যাত্রী পরিবহন সংস্থা রাঙামাটি জোনের চেয়ারম্যান মঈন উদ্দিন সেলিম বলেন, ‘আমরা যদি সতর্কভাবে চলাচল করি তহালে দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে পারি। প্রতিবছরই দুর্ঘটনা ঘটে, কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এর কোন স্থায়ী সমাধান করছে না।’
চট্টগ্রাম অঞ্চলের নৌ-সহায়ক প্রকৌশলী মোশারফ হোসেন বলেন, ‘আমরা এখানে এসে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি আরও গাছের গুঁড়ি আছে কিনা। থাকলে সেগুলো চিহ্নিত করে বয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’
রাঙামাটির পর্যটনশিল্পের বিকাশে ভোগান্তিহীন নিরাপদ ভ্রমণের অনুকূল পরিবেশ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি পর্যটক ও পর্যটন সংশ্লিষ্টদের।
আকন