Ekhon TV :: এখন টিভি

বঙ্গবন্ধু টানেলের কাজ বাকি ৪ শতাংশ, গাড়ির চাপ সামলাতে পরিকল্পনা

বঙ্গবন্ধু টানেলের কাজ বাকি ৪ শতাংশ, গাড়ির চাপ সামলাতে পরিকল্পনা

যানবাহন চলাচল বাড়াতে টোল হার যৌক্তিক সীমার মধ্যে রাখার পরামর্শ

২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১:৫৫

হোসাইন জিয়াদ , এখন টিভি

আর মাত্র ৪ শতাংশ কাজ বাকী কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের। চালু হলে টানেলের দুই পাশে সড়কে যানবাহনের চাপ সামলানো নিয়ে চলছে পরিকল্পনা। এরইমধ্যে যানবাহনের টোল হারও চূড়ান্ত করেছে সেতু মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে যানবাহন চলাচল বাড়াতে টোল হার যৌক্তিক সীমার মধ্যে রাখার পরামর্শ যোগাযোগ বিশেষজ্ঞদের। তবে শেষ সময়ে কাজের পরিধি ও ডলারের মূল্য বাড়ায় প্রায় ৩১৫ কোটি টাকা বেড়েছে টানেলের ব্যয়। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

নগরীর পতেঙ্গা প্রান্তে সাগরপাড়ে গেলে দূর থেকে চোখ আটকে যায় হলুদ রঙ্গের স্টিলের বিশালাকার গেটে। যেখান থেকে শুরু স্বপ্নের কর্ণফুলী টানেল।

স্টিলের গেটটি পাড়ি দিলেই মূল টানেলের শুরু। প্রকল্প পরিচালক জানান, এখন পর্যন্ত ৯৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে টানেলের। বাকী ৪ শতাংশের কাজও এগিয়ে চলছে দ্রুত গতিতে। বর্তমানে টোল প্লাজা তৈরি, কন্ট্রোল সিস্টেম স্থাপন ও লাইটিং এর কাজ চলছে। টানেলের নিরাপত্তা শক্তিশালী করতে বসানো হচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরা ও কন্ট্রোল রুম। কাজের পরিধি বাড়ায় ও নতুন যন্ত্রপাতি ক্রয়ের কারণে টানেলের ভ্যায়ও বেড়েছে ৩১৫ কোটি টাকা। যা গেলো মাসে একনেক সভায় অনুমোদন হয়। এছাড়া সময় বাড়ানো হয়েছে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

কর্ণফুলী টানেলের প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জি. হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, টোল প্লাজা থেকে এগুলো মনিটর করা হবে। অনেকগুলো ক্যামেরা থাকবে। কোথাও কোন সমস্যা দেখা দিলে, যেমন- কোন জায়গা কোন গাড়ি বন্ধ হয়ে গেলো, তখন সেটি দ্রুত সরানোর জন্য আমাদের যে অপারেশনাল মেইনটিনেন্স টিম আছে তাদের প্রয়োজনীয় সবকিছু থাকবে।

সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, টানেল খুললে প্রথম বছর চলাচল করবে প্রায় ৬৩ লাখ গাড়ি। ক্রমান্বয়ে প্রতি বছরই বাড়বে গাড়ির সংখ্যা। ২০৩০ সালে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ গাড়ি ছুটে যাবে টানেলে। সে অনুযায়ী আশপাশের সড়কও প্রস্তুত করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ একাধিক সংস্থার সাথে সমন্বয় করে সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছ বলে জানান প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জি. হারুনুর রশিদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, টানেলকে বিবেচনায় রেখেই ভবিষ্যৎ উন্নয়ন কী হবে সে বিষয়ে একটি কমিটিও হয়েছিলো। উনারা কিছু সুপারিশ করেছিলেন। সেই সুপারিশ অনুসারে আমাদের যেটা করনীয় সেটা আমরা করছি।

এরইমধ্যে টানেলের টোল হারও চূড়ান্ত করা হয়েছে। কার, মাইক্রোবাস ২০০ টাকা, বাস ৩০০-৫০০ টাকা, ট্রাক ৪০০-৮০০ টাকা, ট্রেইলার ১০০০ হাজার টাকা। যা বর্তমান শাহ আমানত সেতু থেকে প্রায় ৩ গুন বেশী। যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টোল হার নির্ধারণ যৌক্তিক না হলে যানবাহনের সংখ্যা কমে যেতে পারে, সেক্ষেত্রে ব্যাহত হব রাজস্ব আদায়।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ইঞ্জি. সুভাষ বড়ুয়া বলেন, একজন প্রাইভেট কারে যদি প্রতিদিন দুইবার আসা-যাওয়া করে তাহলে কিন্তু তার চারশ' টাকা চলে যাবে। নতুন নতুন হয়তো ভালো লাগবে যে, দেখি একটু টানেলের ভেতর দিয়ে যাই। কিন্তু প্রতিদিনই যদি তাকে এভাবে খরচ করতে হয় তাহলে সেটা হয়তো করবে না।

২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩.৩২ কিলোমিটার দৈঘ্যের এ টানেল নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন। প্রথমে ১০ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হলেও সবশেষ বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। টানেলের নির্মাণ কাজ করছে চায়না কনস্ট্রাকশন এন্ড কমিউনিকেশন কোম্পানি যানবাহন চলাচল শুরু হলে এ প্রতিষ্ঠানটি টোল আদায় ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পাবে।

এমএস

Advertisement
Advertisement
Advertisement