Ekhon TV :: এখন টিভি

ধানের কুড়ার ভোজ্যতেল রপ্তানি হচ্ছে ভারতে

ধানের কুড়ার ভোজ্যতেল রপ্তানি হচ্ছে ভারতে

বেশিরভাগ মিলে পরিশোধনের ব্যবস্থা না থাকায় ভারতে রপ্তানি হয় ক্রুড অয়েল

১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৬:১৩

এক দশকেরও বেশি সময় আগে অনেকের জানাই ছিলো না ধানের কুড়া থেকে হতে পারে ভোজ্যতেল। কিন্তু পাঁচ বছর ধরে সেই তেল রপ্তানি করছে উত্তরের অন্যতম শিল্পপ্রধান জেলা বগুড়া। আর এই তেল রপ্তানি করে ৫ বছরে আয় হয়েছে প্রায় ১৯ কোটি মার্কিন ডলার । উৎপাদন ও বিপণনে সঠিক পরিকল্পনা ও উদ্যোগ নেয়া হলে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় ও সাশ্রয়ে অপার সম্ভাবনা রয়েছে এ শিল্পের।

ধান মাড়াইয়ের পর চালের উপর থাকে লালচে আবরণ। মূলত সেই আবরণই রাইস ব্র্যান। বিভিন্ন চালকল থেকে সংগ্রহ করা রাইস ব্র্যান থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বের করা হয় ক্রুড অয়েল। এরপর মেশিনে পরিশোধন করার পর পাওয়া যায় ভোজ্যতেল। বগুড়ায় রাইস ব্র্যান অয়েল উৎপাদন করে চারটি প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে তিনটি প্রতিষ্ঠানে শুধু অপরিশোধিত ক্রুড ওয়েল উৎপাদন হয়। শুধুমাত্র তামিম এগ্রো লিমিটেডে প্রতিদিন ৬০ টনেরও বেশি অপরিশোধিত ক্রুড অয়েলের পাশাপাশি উৎপাদন হয় পরিশোধিত রাইস ব্র্যান ওয়েল। যা রপ্তানি করা ভারতে।

বাংলাদেশে বেশিরভাগ মিলে পরিশোধনের ব্যবস্থা না থাকায় ভারতে রপ্তানি হয় ক্রুড অয়েল। সেখানে পরিশোধনের পর বোতলজাত হয়ে বাজারে বিক্রি হয় ভোজ্যতেল হিসেবে।

গত বছর শুধুমাত্র বগুড়া থেকে ৩ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের রাইস ব্রান ও ক্রুড অয়েল রপ্তানি হয়েছে ভারতে। গত পাঁচ বছর রাইস ব্রান আর ক্রুড অয়েল রপ্তানি করে এই জেলার আয় ছাড়িয়েছে ১৮ কোটি ৭৭ লাখ ডলারের বেশি। একইসাথে পরোক্ষভাবে চালের বাজারেও ভূমিকা রাখছে এই রাইস ব্র্যান।

বগুড়া চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি মাহফুজুল ইসলাম রাজ বলেন, সারাদেশে রাইস ব্র্যান ওয়েলের মোট কারখানা ১৫টির মতো। এরমধ্যে বগুড়াতেই আছে বেশ কয়েকটি। তারা প্রায় ২০০ কোটি ডলারের মতো রপ্তানি করছে। চালের সাথে রাইস ব্র্যান ওয়েলের একটা সম্পর্ক আছে। কারণ হলো, যখন একটা রাইস মিলের মালিক কুড়াটা বেশি দামে বিক্রি করে তখন কিন্তু চালটা একটু কম দাবে তারা বিক্রি করতে পারে।

রাইস ব্র্যান থেকে ক্রুড অয়েল নেয়ার পর অবশিষ্ট অংশকে বলে ডি অয়েলড রাইস ব্র্যান। পশু-পাখির খাদ্য হিসেবে বাজারে যার বেশ কদর। এর ফলে সাশ্রয় হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা। 

রপ্তানির পাশাপাশি স্থানীয় বাজারেও রাইস ব্র্যান তেলের রয়েছে ব্যাপক সম্ভাবনা। রাইস ব্র্যানের পুষ্টিগুণ নিয়ে ভোক্তাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি এ শিল্পের বিকাশে মিলগুলোতে ক্রুড ওয়েল পরিশোধনের ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।

বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি মাহফুজুল ইসলাম রাজ বলেন, পরিশোধন করার যন্ত্রপাতি কিন্তু তাদের নাই। তারা কিন্তু অপরিশোধিত জিনিসটা রপ্তানি করছে। আমাদের এখানে যদি তেল উৎপাদনের মেশিন থাকে তাহলে যেহেতু সারাবিশ্বে তেলের দাম বেশি সেহেতু আমাদের বাজারে একটা প্রভাব পড়বে।

এক দশক আগে বাংলাদেশে শুরু হয় রাইস ব্র্যান অয়েল শিল্পের যাত্রা। ১৭টি মিলের মধ্যে এখন সচল ১৫টি। এসব মিল থেকে বছরে দুই থেকে আড়াই লাখ টন অপরিশোধিত রাইস ব্র্যান অয়েল উৎপাদন হয়। যার বেশিরভাগই রপ্তানি হয় ভারতে।

এমএস

Advertisement
Advertisement
Advertisement