Ekhon TV :: এখন টিভি

তৈরি পোশাক খাতে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনাম

চীনের পোশাকখাতের ক্রয়াদেশ আসছে বাংলাদেশে

সৈয়দ ইফতেখার , এখন টিভি

০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১৩:২৬

যুদ্ধ আর কোভিডের কারণে, চীনে পশ্চিমাদের তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ায় বাংলাদেশের সুযোগ বেড়েছে। ইতিমধ্যে পোশাক রফতানি আয় বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রে ৫১ শতাংশ এবং ইউরোপে ১৬ শতাংশ। ২০২৩ সালে পরিকল্পনায় এগোলে দ্বিগুণ আয়ের সম্ভাবনা। পাশাপাশি নতুন বাজার খোঁজারও পরামর্শ দিচ্ছে অর্থনীতিবিদরা। 

এক যুগ আগেও তৈরি পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশের ধারে কাছে ছিলো না ভিয়েতনাম। বৈশ্বিক পোশাক রফতানি বাজারে ২০১০ সালে যখন বাংলাদেশের অংশ ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, তখন ভিয়েতনামের অংশ কেবল অর্ধেক, ২ দশমিক ৯০ শতাংশ। একক দেশ হিসেবে দ্বিতীয় অবস্থান নিতে ভিয়েতনামের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। 

অর্থনীতিবিদ মামুন রশীদ বলেন, ভিয়েতনামের পোশাক রপ্তানি বাড়ছে। তাদের রপ্তানি জিডিপি অবস্থান বিশ্বে সর্বোচ্চ। তারা এগিয়ে আছে কারণ, তারা শিপিং সময় কমিয়ে এনেছে।

বাংলাদেশ ২০২১ সালে বিশ্বে তৈরি পোশাক রফতানিতে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে, ২০২০ সালে ভিয়েতনাম বাংলাদেশকে তৃতীয় অবস্থানে ঠেলে দিয়ে দ্বিতীয় হয়েছিলো। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা-ডব্লিউটিও প্রকাশিত বিশ্ব বাণিজ্য পরিসংখ্যান পর্যালোচনা ২০২২-এ দেখা যায়, সার্বিক তৈরি পোশাক রফতানিতে ভিয়েতনামের অংশ ২০২০ সালের ৬ দশমিক ৪০ শতাংশ থেকে ২০২১ সালে ৫ দশমিক ৮০ শতাংশে নামে। আর বাংলাদেশের অংশ  ২০২০ সালে ৬ দশমিক ৩০ শতাংশ থেকে ৬ দশমিক ৪০ শতাংশে উন্নীত হয়।

বর্তমানে জ্বালানি সংকটে থাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো আগামীতে পিছিয়ে পড়বে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। তাদের সম্মিলিত অবস্থান তৃতীয়। তুর্কিয়ে আর ভারত পঞ্চম ও ষষ্ঠ অবস্থানে, তারপরে আছে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, হংকং আর পাকিস্তান।

চলতি অর্থ বছরে প্রথম ছয় মাসে পোশাক খাত রপ্তানি করেছে ২ হাজার ২৯৯ কোটি ৬৬ লাখ ডলার। গত বছরের তুলনায় ১৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। এরমধ্যে নিট পোশাকে ১৩ ও ওভেন পোশাকে ১৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। একটি পূর্ণাঙ্গ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট রফতানির তৈরি পোশাক খাত থেকে আসে প্রায় ৮৫ শতাংশ।

২০২২-২৩ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে পোশাক রফতানি বাড়ার হার প্রায় ২০ শতাংশ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অনেক ক্রয়াদেশ চীনে না গিয়ে বাংলাদেশে তা ঢুকছে। এই সুযোগ ২০২৩ সালের পুরোটা জুড়ে থাকবে, তাই তাদের পরিকল্পনা মাফিক এগিয়ে যাওয়ার তাগিদ।

হরাইজন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর মোবাশ্বের আলী স্বপন বলেন, পোশাক খাতের জন্য ইউরোপ ও আমেরিকা আমাদের জন্য বড় বাজার। ভূ-রাজনীতির কারণে আমরা এখন সেই সুযোগ নিতে চাই। এছাড়া যুদ্ধ ও কোভিডের কারণে বড় দেশগুলোকে পোশাক উৎপাদন বন্ধ করতে হয়েছে। তাই তাদের সুযোগ দিয়ে আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক লিগের তথ্য এই সুবাতাস দিচ্ছে, আগামী ২০৩৭ সালের মধ্যে বিশ্বে ২০তম অর্থনীতির দেশ হবে বাংলাদেশ। বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থা ৩৪। ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল করতে, শুধু পোশাক খাতই নয়, বিভিন্ন খাতে রফতানির পরিমাণ বাড়ানোর তাগিদ দিচ্ছে অর্থনীতিবিদরা।

এসআই

Advertisement
Advertisement
Advertisement