Ekhon TV :: এখন টিভি

দেশের কিন্ডারগার্টেন স্কুলে বোর্ড বইয়ের বাইরে অতিরিক্ত অনেক বই পড়ানো হয়। অভিযোগ রয়েছে অতিরিক্ত এসব বই কেবল ব্যবসায়িক কারণে অভিভাবকদের কিনতে বাধ্য করা হয়। যার বাজার বছরে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার।

শিক্ষাবিদরা মনে করেন, এই অতিরিক্ত বই শিশুদের মানসিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত এবং সৃজনশীলতা নষ্ট করে। 

সারাদেশে প্রায় ৩০ হাজার কিন্ডারগার্টেন স্কুলে পড়াশোনা করে ৭০ লাখ শিক্ষার্থী। স্কুল থেকে শিশুদের জন্য বোর্ড বই ছাড়াও অনেক অতিরিক্ত বই কিনতে বলা হয়, যা শিক্ষার্থীদের কাজে আসে না। স্কুলগুলো এমন অনেক উপকরণ কেনার পরামর্শ দেয়। অভিযোগ রয়েছে, এসব বই কিনতে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করা হয়। যার ফলে অভিভাবকদের বাড়তি টাকা খরচ হয়।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বইয়ের দোকানে দেখা যায়, স্কুলের দেয়া বিশাল বইয়ের তালিকা হাতে অভিভাবকদের ভিড়। এসব বইয়ের পেছনে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

অভিভাবকরা জানান, বোর্ড থেকে তারা তিনটি বই পেয়েছেন। স্কুল থেকে দেয়া অতিরিক্ত আরও চারটি। স্কুল থেকে দেয়া বইগুলো অনেক দামি। এসব বই কিনতে খুব কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।

একজন বই বিক্রেতা বলেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই স্কুলের বইয়ের তালিকা নির্ধারণ করে। তারা কিছু কমিশন নেয় এবং আমাদের কাছে পাঠায়। তখন আমরা ১০০ টাকার বই ১৫০ টাকায় বিক্রি করি।

তবে কিন্ডারগার্টেন প্রধানরা বলছেন, শিশুদের দক্ষতা বাড়াতেই সহায়ক হিসেবে অতিরিক্ত এই বইগুলো পড়ানো হয়।

বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মো. মিজানুর রহমান বলেন, কিন্ডারগার্টেনের জন্য এনসিটিবির বইই যথেষ্ট। তবে তার সাথে অতিরিক্ত ২ থেকে ৩টি বই পড়ানো হয়। যেমন বাংলা ব্যাকরণ, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এসএম হাফিজুর রহমান বলেন, বোর্ড প্রদত্ত এনসিটিবির বই বিশেষজ্ঞদের দ্বারা প্রস্তুত করা হয়। এছাড়া বাজারে বিক্রি হওয়া বইয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এ ধরনের বই শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে এবং সৃজনশীলতা নষ্ট করে।

বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি'র তথ্যমতে, কিন্ডারগার্টেনগুলোতে সরবরাহ করা অতিরিক্ত এই বইয়ের বাজার বিগত বছরগুলোতে ছিলো প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। সম্প্রতি কাগজসহ বই ছাপানোর অন্যান্য উপকরণের দাম বাড়ায় এই বাজার আরও বড় হবে বলে মনে করেন প্রকাশকরা।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বলছে, শিশুদের ধারণ ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে এবং যে শ্রেণিতে যতটুকু দরকার সেভাবেই তারা বই প্রণয়ন করে থাকে। তাই এনসিটিবি'র বাইরে অতিরিক্ত কোনো বই শিশুদের উপর চাপিয়ে দেয়া অযৌক্তিক।

এনসিটিবির চেয়ারম্যান মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, আমরা অনেক স্কুলের অনেক বই বাতিল করেছি। এই অবস্থা রোধে আমরা ও সরকার ব্যর্থ হয়েছি। এ বিষয়ে সমঝোতা চাইলে নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে।

এসআই

Advertisement
Advertisement
Advertisement