
বনানী পর্যন্ত প্রথম ধাপে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রস্তুত
‘৮০ শতাংশ যানজট কমবে এই প্রকল্পে’
তেজগাঁও পর্যন্ত কাজ শেষ করেই খুলে দেয়া হবে এক্সপ্রেসওয়ে
মাহমুদ রাকিব , এখন টিভি
১৯ মার্চ ২০২৩, ১৫:১৫
গাড়ি চলবে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার বেগে। থাকবে না কোন গতিরোধক। বিমানবন্দর থেকে চিটাগং রোডে যেতে লাগবে সর্বোচ্চ ২৫ মিনিট। ঢাকার প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ৩১টি পয়েন্ট থেকে ইচ্ছেমত গাড়ি উঠতে ও নামতে পারবে। এতে ৪০ শতাংশ যানজট কমার দাবি প্রকল্প পরিচালকের। তবে বনানী পর্যন্ত প্রথম ধাপ খুলে দেয়ার প্রস্তুতি থাকলেও সমালোচনা থেকে রেহাই পেতে কাজ চলছে তেজগাঁও পর্যন্ত খুলে দিতে।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরোটা চালু হলে হানিফ ফ্লাইওভারের প্রয়োজনীয়তা কমে যেতে পারে।
মহাখালি ফ্লাইওভারের নিচে গাজীপুরমুখী রেলপথে ছুটছে দুরন্ত গতির ট্রেন। যেখানে রেললাইনের দু'পাশে শক্ত ভীতের ওপর দাড়িয়েছে শত শত উচু পিয়ার আর পিয়ারের ওপরে বসেছে পাইলক্যাপ ও কলাম এবং তার ওপরে ক্রসবিম ও আই গার্ডার।
বিমানবন্দর বনানী এলাকায় গেলে ঢাকার প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আরও দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। মূলত যানজট নিরসনে বিমানবন্দর থেকে ঢাকা চট্টগ্রাম রোডের কুতুবখালি পর্যন্ত রেললাইনকে ঘিরে করা হচ্ছে এই উড়াল সড়ক। যেখানে বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত প্রথম ধাপের প্রায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার এলাকায় এখন চলছে শেষ মুহূর্তের পিচ ঢালাইয়ের কাজ। বসানো হয়েছে রেলিং আর ফ্লাডলাইটও। বনানি থেকে মগবাজার পর্যন্ত দ্বিতীয় অংশের প্রায় সাড়ে ৫ কিলোমিটারের কাজও এগিয়েছে অনেকখানি।
বিমানবন্দর থেকে তেজগাও পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটারে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েকে পাড়ি দিতে হচ্ছে চারটি ফ্লাইওভার। যেখানে কুড়িল ও বনানি ফ্লাইওভার অংশ পুরোপুরি শেষ হলেও মহাখালী ও তেজগাও লিংক রোড ফ্লাইওভারের ওপরের অংশে এখনো বাকি আইগার্ডার বসানো। আর তৃতীয় ধাপে এলিবেটেড এক্সপ্রেওয়েকে ক্রস করতে হবে মগবাজার, খিলগাও ও হানিফ ফ্লাইওভার।
প্রকল্প পরিচালক জানান, ফ্লাইওভার থেকে কমপক্ষে সাড়ে ৫ মিটার ওপরে করা হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। ফ্লাইওভারে ওঠা ও নামার জন্য দুই ধাপের র্যাম্পগুলোও এখন পুরোপুরি দৃশ্যমান।
এক্সপ্রেসওয়েতে মোট ওঠার র্যাম্প আছে ১১টি, যেখানে টোল আদায়ের জন্য ব্যবহার হবে ৭টি।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম শাখাওয়াত আকতার বলেন, ‘ওপরে কোন সিগন্যাল থাকবে না। গাড়ি চলছে ৮০ কিলোমিটার গতিতে। এই সময়ে যার নামার দরকার সে নেমে যাবে, আবার যার ওঠার দরকার সে উঠবে।’
র্যাম্পসহ প্রায় ৪৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এ প্রকল্পটি ২০১১ সালে শুরু হয়। অর্থ সংকটে কয়েক দফায় মেয়াদ বাড়ার বাড়াবাড়ি খরচ বেড়ে দাড়িয়েছে ১৩ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা। যা তিনটি বিদেশী কোম্পানি ও বাংলাদেশ সরকার যৌথভাবে বিনিয়োগ করছে।
তবে এখন কোন অর্থ সংকট নেই জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক বলেন, বিমানবন্দর থেকে বনানী অংশ খুলে দেয়ার জন্য তারা প্রস্তুত। তবে মেট্রোরেলের মতো সমালোচনা এড়াতে একসাথে তেজগাও পর্যন্ত কাজ শেষ করে খুলে দেয়া হতে পারে বলে তিনি জানান।
তবে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু এটা পিপিপি প্রকল্প তাই তেজগাঁওয়ের জন্য অপেক্ষা না করে যতটুকু হয়েছে ততোটুকুই খুলে দেয়া উচিত। পাশাপাশি তৃতীয় ধাপ চালু হলে যাতে হানিফ ফ্লাইওভারের সাথে কোন সাংঘার্ষিক অবস্থা না হয়, সেদিকেও সজাগ থাকার পরামর্শ তাদের।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. সামছুল হক বলেন, ‘পিপিপি প্রকল্প নির্মাণ ও পরিচলনার দায়িত্ব বিনিয়োগকারীর। অতএব বিনিয়োগকারী চাইলে বলতে পারে এটি আমি চালু করতে চাই।
এ পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের তিনটি ধাপ মিলিয়ে মোট কাজের অগ্রগতি ৫৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
আকন