
রাজধানীতে ছিনতাই ও থাবা পার্টির দৌরাত্ম
ছিনতাই বন্ধে ভিন্ন কৌশলে পুলিশ
আরিফ হোসেন , এখন টিভি
১৮ মার্চ ২০২৩, ১৫:৫০
রেড জোন নির্ধারণ করে ছিনতাই বন্ধে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবুও রাজধানীতে থামানো যাচ্ছে না ছিনতাই ও থাবা পার্টির দৌরাত্ম। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হলেও জেল থেকে বের হয়ে আবার জড়িয়ে পড়ছে পুরোনো পেশায়।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ বাড়ার মূল কারণ অর্থনৈতিক সংকট ও মাদকের দৌরাত্ম।
সম্প্রতি এক ছিনতাইয়ের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, এক বাইকারকে থামিয়ে দুই ছিনতাইকারী রামদা দেখিয়ে ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিচ্ছে। অন্যএক ভিডিওতে দেখা যায়, মুখোস পরা কয়েকজন ছিনতাইকারী রিকশা আরহীর ব্যাগ ও মোবাইল ছিনিয়ে নিচ্ছে।
যদি এমন ঘটনা আপনার চোখে পড়ে ? অথবা দেশীয় অস্ত্র ধরে আপনার মোবাইল মানিব্যাগ কেড়ে নেয় অপরিচিত কেউ? বাইকে - রিক্সায় চলাচলের সময় কেউ ব্যাগ অথবা ফোন ধরে টান দেয়? কি করবেন?
এই ধরণের ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন অথবা শুনেছেন এমন একজন এখন টিভিকে বলেন, ‘অনেক সময়ই আমরা দেখছি রিকশায় মানুষ যাচ্ছে, তখনই তাদের ফোন ও ব্যাগ ছিনতাই করে নিয়ে যাচ্ছে।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘সড়কে প্রায়ই এমন ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। অনেক বাইকারকে কুপিয়ে জখমও করছে ছিনতাইকারীরা।’
এমন অভিজ্ঞতা শুধু মিরপুর বেঁড়িবাধের গাবতলী থেকে আসা মানুষদের। রাতের গভীরতা বাড়ার সাথে সাথে এই এলাকায় বাড়ে অপরিচিত মানুষের আনাগোনা। আতঙ্কে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ।
রাত যতই বাড়ুক ঘরে ফিরতে হলে এ সব মানুষের ভরসা করতে হয় পা, রিক্সা অথবা লেগুনার ওপর। আর বিপত্তিটা বাধে এখানেই। হুট করে বাইকে এসে ছোঁ মেরে নিয়ে যায় সব। তাই ছিনতাইয়ের এলাকা ভিত্তিক রেড জোন, সবার জানা।
স্থানীয়রা বলেন, ‘কিছু বখাটেরা এসব ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত। পুলিশের টহল কম থাকার সুযোগে তারা এসব করছে।’
রাজধানীর ৫০ টি থানা এমন শতাধিক ছোট বড় রেড জোন নির্ধারণ করে টহল টিম বাড়িয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যদিও আগেই থেকেই বাস টার্মিনাল, লঞ্চ টার্মিনাল ও গুরুত্বপূর্ণ ছিনতাইয়ের স্পট নির্ধারণ করে কাজ করে আসছিলো তারা।
ছিনতাইয়ের ঘটনায় প্রতিদিন আটক হচ্ছে অনেকেই। আটককৃতরা অধিকাংশ মাদক সেবী ও ভাসমান মানুষ অভিযোগ পুলিশের।
পুলিশের মিডিয়া উইং এর প্রধান ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমরা দেখতে পেয়েছি গাবতলী, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, পুরান ঢাকা, মতিঝিল, যাত্রবাড়ী, উত্তরা ও লঞ্চঘাটসহ কয়েকটি স্পটে এসব ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে বেশি। এই ছিনতাইয়ের সঙ্গে অনেক ভাসমান মাদকসেবীরাও জড়িত রয়েছে। প্রতিনিয়তই আমরা তাদের আটক করে আইনের আওতায় নিয়ে আসছি।’
করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক সংকট ও মাদকের দাপোট সাম্প্রতিক সময়ে বাড়াচ্ছে ছিনতাই, আশঙ্কা অপরাধ বিশ্লেষকদের। সহজে কারামুক্তি, কারাগারে শোঁধরানোর পরিবেশ ও কর্মসংস্থানের অভাবে অধিকাংশ ছিনতাইকারী ধরে রাখছেন এই পেশা।
অপরাধ বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান বলেন, ‘এটা আসলে দারিদ্রতার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। অনেকেই দেখা যায় চাকরি হারিয়েও এই পেশায় চলে আসে। করোনার পরে এই ঘটনাগুলো আগের থেকে অনেক বেড়েছে।’
সাধারণ মানুষের সচেতনতা কমিয়ে আনতে পারে ছিনতাইয়ের ঝুঁকি। ছিনতাইকারীর তথ্য ৯৯৯ এ কল দিয়ে জানানোর অনুরোধ জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আকন