
বিমান ভাড়ায় পকেট ভারী ফ্লাইনাস ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের
বিমানের লোকসান পোষাতে দায় নিতে হচ্ছে হজযাত্রীদের

স্বতন্ত্র কমিটির মাধ্যমে ভাড়া নির্ধারণের দাবি হাবের
১৬ মার্চ ২০২৩, ১৪:১১
নাঈম আবির , এখন টিভি
১৬ মার্চ ২০২৩, ১৪:১১
কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা বাড়তি ধরা হয়েছে চলতি বছর হজযাত্রার বিমান ভাড়ায়। সারা বছরের লোকসানের ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই এমন হিসাব-নিকাশে নেমেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন- এই ভাড়া আদতে পকেট ভারি করছে বিদেশি এয়ারলাইন্সের। স্বতন্ত্র কমিটির মাধ্যমে এই ভাড়া নির্ধারণের দাবি হাবের।
এদিকে তিন দফায় সময় বাড়ানোর পর হজ নিবন্ধনের সময় শেষ হচ্ছে আজ।
বাংলাদেশে চলতি বছর হজের জন্য বিমান ভাড়া নির্ধারন করা হয়েছে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা। যা গতবারের তুলনায় ৫৭ হাজার ৭৯৭ টাকা বাড়তি। এর প্রভাব পরেছে হজের মূল প্যাকেজেও।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ যাত্রায় লাগছে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। উভয় প্যাকেজেই গত বছরের তুলনায় বেড়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। ফলে তিন দফায় নিবন্ধনের মেয়াদ বাড়িয়েও কোটা পূরণ করতে ব্যর্থ ধর্ম মন্ত্রণালয়।
হজ প্যাকেজের সবচেয়ে বড় ব্যয়ের খাত বিমান ভাড়ার এমন বৃদ্ধি শুরু থেকেই অযৌক্তিক বলে আসছে ট্রাভেল এজেন্টদের সংগঠন আটাব।
আটাব’র সেক্রেটারি আব্দুস সালাম আরেফ বলেন, ‘টিকেট খাতে ৩০% ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এই ভাড়া বাড়ানোর ইতিহাস যদি দেখি আমরা তাহলে শুরু থেকে এমন ৩০% কিন্তু কখনোই বাড়েনি। এর আগে সর্বোচ্চ ৭% পর্যন্ত বেড়েছিলো। বিমান ভাড়াই শুধু এক লাখ ৯৮ হাজার টাকা বাড়ানো হয়েছে, এটি অনেক বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে।’
এদিকে হাবও বলছে বিমান ভাড়া স্বতন্ত্র কমিটির মাধ্যমে নির্ধারণ করা উচিত।
হাব’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মাওলানা ইয়াকুব শরাফতী বলেন, ‘আমরাও চাই যেন বিমান বাংলাদেশ লাভ করুক। তবে তারা ১০ টাকার ব্যবসা ১০০ টাকা করবে এটা কিন্তু ঠিক না। এজন্য বিমান ভাড়া স্বতন্ত্র কমিটির মাধ্যমে নির্ধারণ করা উচিত বলে মনে করি।’
এই মূহুর্তে ঢাকা জেদ্দা আকাশ পথে আসা যাওয়ার খরচ এয়ারলাইন্স ভেদে এক লাখ থেকে এক লাখ বিশ হাজার টাকার মধ্যে। বছরের অন্যান্য সময়ে টিকেট মূল্য থাকে লাখের নিচে। ২ সপ্তাহের ওমরাহর প্যাকেজেও বিমান ভাড়া থাকে সর্বোচ্চ ১ লাখ ২০ এর মধ্যে। কিন্ত সেই একই রুটে এবার হজের জন্য বিমান ভাড়া প্রায় ২ লাখ।
বেবিচক’র সাবেক চেয়ারম্যান এয়ার কমোডর (অব:) ইকবাল হোসেন বলেন, ‘এই বছর এই টিকিটের দাম সর্বোচ্চ এক লাখ ৬০ হাজারের বেশি হওয়া কোনভাবেই উচিৎ নয় বলে আমি মনে করি।’
এই বিশেষজ্ঞ বলছেন, বিমানের সারা বছরের ক্ষতি পোষোতেই হজের মৌসুমে বাড়ানো হয় বিমান ভাড়া। আর এমন সিদ্ধান্তে পকেট ভারি হচ্ছে ৫০ শতাংশ হজযাত্রী পরিবহন করা সৌদিয়া এয়ারলাইনস ও ফ্লাইনাসের। ডলার সংকটের এই সময়ে বড় অঙ্ক চলে যাচ্ছে বাইরে।
হজযাত্রী পরিবহনে বিমান ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্স এমন একক ব্যবসা ভেঙে অন্য এয়ারলাইন্সকেও সুযোগ দেবার দাবি ট্রভেল এজেন্টদের।
প্যান ব্রাইট ট্র্যাভেল লিমিটেটের এমডি মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘আমি মনে করি এবিষয়টা নিয়ে সরকারের ভাবা উচিৎ। প্রয়োজন হলে সব এয়ারলাইন্সকে উন্মুক্ত করে ভাড়া সমন্বয়ে কথা বলে এর সমাধান খুঁজে বের করা উচিৎ।’
এ বছর কোটা পূরণ করতে না পারলে আগামী বছর হজের কোটা কমতে পারে বাংলাদেশি হাজিদের জন্য। তাই প্রয়োজনে হজকে সরকারের ভর্তুকির আওতায় এনে হজ যাত্রাকে সহজ করা উচিত বলে মনে করেন ট্রাভেল এজেন্সিগুলো।
আকন
বিমান বাংলাদেশ
বিমান ভাড়া
বিমান ভ্রমণ
বিমানের টিকিট
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর