Ekhon TV :: এখন টিভি

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে স্বল্প ও দূরপাল্লার বিভিন্ন যানবাহন। এর বড় অংশই বাস। আর এসব বাসের বডি তৈরি ও মেরামতে কুমিল্লায় গড়ে উঠেছে অটোমোবাইল কারখানা। বছরে এ শিল্পে লেনদেন হচ্ছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।

অটোমোবাইল কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, পাইপ ও স্টিল সিট দিয়ে নির্দিষ্ট আকৃতি বানাচ্ছেন শ্রমিকরা। দাঁড়িয়ে আছে বাস-ট্রাকের কঙ্কাল। সেগুলো ঘষামাজা চলছে। রং করা নিয়ে ব্যস্ত মিস্ত্রিরা। বাস-ট্রাকের বডি তৈরির এমন কর্মযজ্ঞের দেখা মিলছে কুমিল্লা নগরীর ঢুলিপাড়া, শহরতলীর শাসনগাছা, নোয়াপাড়া, আলেখারচর, ধর্মপুর ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে, কুমিল্লার বিভিন্ন অংশে গড়ে উঠা শ'খানেক ওয়ার্কশপে।

ওয়ার্কশপগুলোতে তৈরি হয় হিনো, অশোক লে-ল্যান্ড, টাটার মতো নামি-দামি বিদেশি কোম্পানির বাস-ট্রাকের বডি। এছাড়াও তৈরি হয় মিনিবাস, কাভার্ডভ্যান ও পিকআপের বডিও। দুর্ঘটনা এবং নষ্ট হয়ে যাওয়া গাড়ির বডিও করা হয় রি-মডেলিং। ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, নোয়াখালী এবং আশপাশের জেলার পরিবহন মালিকদের বেশিরভাগ গাড়ির বডি তৈরি হয় এখানে।

দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মীরা অল্প সময়েই বাস-ট্রাকের আন্তর্জাতিক মানের বডি তৈরি করছেন। এতে কমছে আমদানি নির্ভরতা। আমদানিকৃত বাজারমূল্যের চেয়ে এখন স্থানীয়ভাবে বডি নির্মাণে খরচের অংকও কমেছে। তাই আলাদাভাবে ইঞ্জিন, চেসিস ও কাঁচামাল আমদানি করে পছন্দের ওয়ার্কশপে বডি নির্মাণ করছেন পরিবহন ব্যবসায়ীরা।

কারখানার শ্রমিকরা বলেন, ‘প্রথমে একটি বাসের চেসিজ আমদানি করে নিয়ে আসে, সেটি কারখানায় এনে ২০ থেকে ২৫ দিনে পূণাঙ্গ বাসে রূপান্তর করা হয়। এই কারকানাগুলোতে রং ও বডি সবই তৈরি করা হয়।’

ওয়ার্কশপ মালিক ও কর্মচারিরা বলছেন, বাস-ট্রাকের বডির বেশিরভাগ সরঞ্জাম এখন কুমিল্লাতেই পাওয়া যায়। আগে বডি মেরামত হলেও বর্তমানে প্রত্যেক ওয়ার্কশপে মাসে তিন থেকে চারটি ফুলবডি তৈরি হচ্ছে। ইঞ্জিন, চেসিস হলেই যে কোন মডেলের গাড়ির বডি নির্মাণে সক্ষমতা রয়েছে তাদের।

শখানেক ওয়ার্কশপে মাসে নুতন -পুরনো মিলিয়ে ৪০০ যানবাহনের বডি তৈরি হচ্ছে। সব মিলিয়ে এ শিল্পে বছরে লেনদেন ৫০০ কোটি টাকারও বেশি।

বাংলাদেশ অটোমোবাইল ওয়ার্কশপ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, ‘যেকোন গাড়ির ডিজাইন আমরা করে দিতে পারি। এইসব কারখানায় অনেকেই কাজ শিখে বিভিন্ন দেশে মোটা বেতনে চাকরি নিয়ে চলে গিয়েছে।’

ওয়ার্কশপগুলোতে তিন শতাধিক শ্রমিক কাজ করছেন। আর এসব কারখানা থেকে রাজস্ব আদায়ে তৎপর আছে কারখানা অধিদপ্তর।

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-মহাপরিদর্শক এম এম মামুন অর রশিদ বলেন, ‘এসব কারখানায় যদি কোন শ্রমিক আহত হন তাহলে তাদের আর্থিক সহযোগীতার ব্যবস্থা রয়েছে।’

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অটোমোবাইল শিল্পের পরিধি বাড়ানো গেলে একদিকে যেমন কমবে আমদানি নির্ভরতা, তেমনি সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে এ খাতের শ্রমিক ও পরিবহন রপ্তানিও।

আকন

Advertisement
Advertisement
Advertisement