Ekhon TV :: এখন টিভি

দেশে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মেডিকেল ল্যাবের সংখ্যা হাতেগোনা। আইএসও সনদ পাওয়া ৬টি ল্যাবের সবকটিই বেসরকারি। সরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর মানোন্নয়নে স্বাস্থ্যবিভাগের তেমন কোন আগ্রহ নেই। সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিতে সকল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মানোন্নয়নের পাশাপাশি শীর্ষ ল্যাবগুলোকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জোর তাগিদ বিশেষজ্ঞদের।

স্বাস্থ্য সেবার অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ এখন পরীক্ষা নীরিক্ষা। চাহিদা বাড়ায় দেশে সাড়ে ৮ হাজার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিবন্ধন দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। অথচ সর্বোচ্চ ২০০ এর বেশী ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ওপর আস্থা রাখতে পারেন না খোদ চিকিৎসকরাই। একই পরীক্ষা একাধিক সেন্টারে করতে বাধ্য হওয়ায় চিকিৎসা শুরুর আগেই রোগীদের খরচ করতে হয় হাজার হাজার টাকা।

এই বাস্তবতায় বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড বলছে, বাংলাদেশে মাত্র ৫টি মেডিকেল ল্যাব আইএসও১৫১৮৯ এর শর্ত পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিরাজগঞ্জের এই ৫টি ল্যাবের মাত্র ১০২ টি পরীক্ষা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হতে পেরেছে। যদিও নানা সীমাবদ্ধতায় একই ল্যাবের অন্যান্য শত শত পরীক্ষা সেই মান অর্জন করতে পারেনি।

তবে বাংলাদেশে আইএসও সনদপ্রাপ্ত প্রথম ল্যাব আইসিডিডিআরবি'র। অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড যাত্রা শুরুর আগে থেকেই আইসিডিডিআরবির ১৭৭ টি পরীক্ষা আইএসও সনদপ্রাপ্ত হয়েছে, যার অনুমোদন নেয়া হয়েছে থাইল্যান্ড থেকে।

বাংলাদেম অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ডের ডেপুটি ডিরেক্টর মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘যেসব নিয়ম রয়েছে সেগুলো যদি তারা ঠিকমত পালন করতে পারে তাহলে টেকনিক্যাল কমিটির সুপারিশ শেষে বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড তাদের সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে।’

এখন পর্যন্ত দেশের কোন সরকারি হাসপাতালের ল্যাব আইএসও সনদ প্রাপ্তির জন্য আবেদন করেনি। এছাড়াও মানোন্নয়নের জন্য তেমন কোন আগ্রহও নেই স্বাস্থ্য বিভাগের। মেডিকেল ল্যাবের মানোন্নয়ন না করে সর্বাধুনিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা কোনভাবেই সম্ভব নয় বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

বারডেম হাসপাতালের ল্যাবরেটরি সার্ভিসেস’র সাবেক পরিচালক অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী বলেন, ‘এটি আসলে বাধ্যতামূলক, এটা করলে মানটা সংরক্ষিত এটা বলা যাবে। অ্যাক্রিডিটেশন করলে যেমন দেশের বাইরে থেকে রোগী আসবে তেমনি দেশের রোগীদেরও সঠিক সেটাটি নিশ্চিত করা যাবে।’

সমস্যা সমাধানে মেডিকেল পরীক্ষা নীরিক্ষার জন্য আলাদা অধিদফতর গঠনের তাগিদ দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও প্যাথলোজিস্ট অধ্যাপক কামরুল হাসান খান।

তিনি বলেন, ‘যদি ভুল রিপোর্ট আসে তাহলে ওই রোগীর চিকিৎসাই ভুল হবে। একজন রোগীরও অধিকার সঠিক রিপোর্টটি পাওয়ার। নিয়ন্ত্রণের জায়গাটা আমাদের দুর্বল হয়ে গেছে। আমরা যদি মানসম্পন্ন একটি ল্যাবরেটরি বোর্ড আশা করি তাহলে এগুলো দেখার জন্য সেই লোকগুলো থাকতে হবে।’

এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে আইএসও সনদপ্রাপ্ত মেডিকেল ল্যাবের সংখ্যা প্রায় ৬ হাজার। যার মধ্যে প্রায় ২ হাজার ৩০০ ল্যাব রয়েছে পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের ল্যাবগুলো আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা না গেলে বাড়বে না রোগীদের আস্থা, কমবে না সীমাহীন ভোগান্তি।

আকন

Advertisement
Advertisement
Advertisement