Ekhon TV :: এখন টিভি

সারা বিশ্বে কয়লাকে বলা হয় ডার্টি পাওয়ার। উন্নয়নের চাহিদা পুরণে আগামীর বাংলাদেশে জ্বালানির চাহিদা পুরণে কয়লা হতে যাচ্ছে অন্যতম ভরসা।

আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দাম কমে অর্ধেকে নেমেছে। সামনের গরমে বিদ্যুতের চাহিদা দাঁড়াবে ১৬ হাজার মেগাওয়াটে। দেশের সবগুলো কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রাখতে পারলে তখন তুলনামূলক সস্তায় বিদ্যুৎ মিলবে এই জ্বালানি থেকে। 

তবে তার জন্য দিনে ৪০ হাজার টন এবং বছরে ১ কোটি ৪৬ লাখ টন কয়লা দরকার হবে। কিন্তু ডলার সংকটে সবগুলো কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য জ্বালানি নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

আমদানির কয়লায় নির্ভর করে এই মুহুর্তে ৩টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে আছে। ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার পায়রা চলছে গেলো দুই বছরের বেশি সময় ধরে। ৩০৭ মেগাওয়াটে বরিশাল ইলেক্ট্রিক পাওয়ারও বাণিজ্যিক উৎপাদনে গেছে সম্প্রতি। এখনো পরীক্ষামূলক উৎপাদনে আছে ৬৬০ মেগাওয়াটে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট। আর এপ্রিলে আসবে বেসরকারি খাতের এস এস পাওয়ার। আর উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে মাতারবাড়িও। 

এই কেন্দ্রগুলো একসাথে চালু থাকলে প্রতিদিন লাগবে ৪০ হাজার টন পরিমাণ কয়লা। আর বছরে লাগবে ১ কোটি ৪৬ লাখ টন। পুরোদমে উৎপাদন চালিয়ে যেতে চাইলে কয়লা আমদানি অব্যাহত রাখতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ডলার সংকটে কয়লা আমাদানি স্বাভাবিক রাখতে বেগ পেতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক সুভাষ চন্দ্র পান্ডে বলেন, ‘আমাদের এই কেন্দ্র চালাতে উন্নত মানের যে কয়লা লাগে তা এই উপমহাদেশে পাওয়া যায় না। তাই এটি চালাতে সব সময়ই বৈদেশিক মুদ্রার দরকার হবে।’

কয়লা সংকটে এরইমধ্যে উৎপাদন ব্যবহত হয়েছে পায়রা এবং রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। সরবরাহ স্বাভাবিক না থাকলে আসন্ন গরমে চ্যালেঞ্জে পড়তে পারে অন্যগুলোর উৎপাদনও।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম. তামিম বলেন, ‘কয়লা আমদানির জন্য যে টাকার দরকার সেটি আমরা সব ধরণের আমদানির ক্ষেত্রেই দেখেছি ডলার সংকট। সামনে গরম আসছে, এই সময় মানুষের বাসা বাড়ি বলেন আর শিল্প কারখানা বলেন সব খানেই বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে। তাই এবিষয়ে সরকারের অবশ্যই সহযোগীতা প্রয়োজন।’

এই বিশেষজ্ঞ হিসাব দিচ্ছেন, ২০৩০ সালের চাহিদা বিবেচনায় সরাসরি বিদ্যুৎ আমদানির পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের তেল, গ্যাস এবং কয়লা আমদানিতে সরকারের খরচ হবে বছরে ২৫ বিলিয়ন ডলার। সস্তার কয়লা আনতে গেলেও যেখানে খরচ করতে হবে কম করে বছরে ৫ বিলিয়ন ডলার। 

এদিকে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলছেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কয়লা আমদানিতে কোম্পানিগুলোতে সহযোগিতা করছে সরকার।

দুরত্ব বিবেচনায় বাংলাদেশের জন্য কয়লা আমদানির প্রধান বাজার ইন্দোনেশিয়া। তবে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আমদানির সুযোগ আছে। গত ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেটে কয়লা দাম ৪০০ ডলার হলেও বর্তমানে তা ২১০ ডলারে নেমে এসেছে। বর্তমান দরে, প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ১৩/১৪ টাকা খরচেই উৎপাদন সম্ভব বলে মনে করছে কেন্দ্রগুলো।

আকন

Advertisement
Advertisement
Advertisement