
চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশের বড় সুযোগ
সিউল আহমেদ , এখন টিভি
০৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:২১
করোনার কারণে চীন ও ভিয়েতনামের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি বন্ধ থাকায় বড় সুযোগ বাংলাদেশের সামনে। বিশ্বের নামিদামি ক্রেতাদের নজরও এখন বাংলাদেশের দিকে। তবে এজন্য প্রয়োজন মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন।
এছাড়া ২০৩০ সালের মধ্যে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি ১০ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ট্যানারিগুলোর কমপ্লায়েন্স সনদ নিশ্চিত করাই এ মুহূর্তের বড় চ্যালেঞ্জ।
রবিউল ইসলাম প্রায় ১৭ বছর ধরে চামড়াজাত পণ্য নিয়ে ব্যবসা করছেন। হাজারীবাগের একটি দোকান দিয়েই তাঁর সংসার চলে। তবে এই ১৭ বছরে এর চেয়ে খারাপ সময় তিনি পার করেননি।
তিনি বলেন, করোনার কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। নিয়মিত ভাড়া দিতে হয়েছে কিন্তু বেচাকেনা কম হয়েছে।
একই অবস্থা আশেপাশের দোকানগুলোর। রাজধানীসহ সারাদেশে চামড়াজাত পণ্য নিয়ে কিছুটা বিপাকে ব্যবসায়ীরা। এছাড়াও যারা কাঁচা চামড়া ব্যবসার সাথে জড়িত তাদেরও প্রায় একই অবস্থা।
এক ব্যবসায়ী বলেন, আগে যে বেচাকেনা ছিলো এখন ২০ শতাংশ কমে গেছে। এতে করে বিপাকে পড়তে হয়েছে।
তবে গত অর্থবছরে কিছুটা আশা জাগাচ্ছে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, উচ্চ মূল্যস্ফীতিসহ পণ্য রপ্তানিতে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ। তবুও সব কিছুকে পেছনে ফেলে পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশ ইতিবাচক ধারায় রয়েছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে অর্থাৎ জুলাই-ডিসেম্বর চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৬৩ কোটি ৭২ লাখ ডলার, আর তাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ শতাংশ। আগের অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রপ্তানি হয়েছিল ৫৬ কোটি ৩৬ লাখ ডলার।
এদিকে চামড়া শিল্পের রপ্তানি আয় ২০৩০ সালের মধ্যে এক বিলিয়ন ডলার থেকে ১০ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে চায় সরকার। তবে বাংলাদেশের চামড়াজাত পণ্যকে বিদেশে রপ্তানি ও চামড়া ব্যবসা থেকে ১০-১২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে হলে কারখানাগুলোকে কমপ্লায়েন্সের অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। বাংলাদেশের মাত্র ৩টি প্রতিষ্ঠান কম্পলায়েন্স সার্টিফিকেট পেয়েছে। যাকে এই খাতে রপ্তানি বাড়ানোর অন্যতম প্রতিবন্ধকতা বলছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ ট্যানার্স এসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের যে অবকাঠামো ও সক্ষমতা আছে, এতে করে বছরে ১০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি করা সম্ভব। কিন্তু সে অনুযায়ী আমরা মার্কেট তৈরি করতে পারিনি।
বাংলাদেশ থেকে চীন, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি, জাপান ও স্পেনের মতো দেশে 'ক্রাস্ট' ও 'ফিনিশড লেদার' রপ্তানি হয়। ওয়েট ব্লু চামড়া রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার পর আবারও নতুন করে উজ্জীবিত হবে চামড়া ও চামড়াজাত খাত।
এদিকে চামড়া রপ্তানির বিশ্ববাজারে চীন ও ভিয়েতনামে করোনার লকডাউনের কারণে তাদের মার্কেট বন্ধ। তাই বিশ্বের নামিদামি বায়ারদের নজর এখন বাংলাদেশের দিকে। তবে শুধু সস্তা নয়, ভালো মানের চামড়া শিল্পের উৎপাদনও বাড়াতে হবে বলে মনে করছেন চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির সাথে জড়িতরা।
এএইচ