
ডলার নির্ভরতা কমাতে চায় বিশ্বের অনেক দেশ
এখনটিভি ডেস্ক, এখন টিভি
০৩ এপ্রিল ২০২৩, ১৬:৩৫
বৈশ্বিক মুদ্রা বাজারে ডলারের একচেটিয়া আধিপত্য কমাতে বিশ্বের অনেক দেশই ডলার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। রাশিয়া, চীন ও ভারত বাণিজ্য পরিচালনায় নিজ দেশের মুদ্রায় লেনদেনের ওপর জোর দিচ্ছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ভূ-রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে মার্কিন ডলারের অপব্যবহারের কারণে বিশ্ববাজারে এই শক্তিশালী মুদ্রার প্রভাব ও বাণিজ্যের ক্ষতি কমাতে অনেক দেশ তাদের নিজস্ব মুদ্রায় বাণিজ্য করতে ঝুঁকে পড়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ডলার রিজার্ভ মুদ্রা হিসাবে বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেও ডলার শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। দ্রব্যমূল্য, ঋণ ও সুদের হার সবই নির্ভর করে ডলারের ওপর।
বিশ্বের আর্থিক ব্যবস্থায় শক্তিশালী এই মুদ্রাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এক ধরনের ভূ-রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্র কোনো দেশের ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে সে দেশ বিশ্ববাজারে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অনেক সময় আবার মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠীদের অর্থায়ন বন্ধ হয়। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে, ওয়াশিংটন কখনই খাদ্য বা মানবিক সহায়তার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে না। তবে নিষেধাজ্ঞার পরিধি এত বিস্তৃত যে অন্য কোন দেশ এটির সাথে ব্যবসা করতে পারে না।
নিষেধাজ্ঞা দ্বারা প্রভাবিত দেশগুলোর অভিযোগ, ওয়াশিংটন তার ইচ্ছা চাপিয়ে দেওয়ার জন্য ডলারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে।
অনেক দেশ তাদের বাণিজ্য থেকে ডলারের একক নির্ভরতা কমাতে নিজস্ব মুদ্রায় বাণিজ্য করার পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইতোমধ্যে চীন ও ব্রাজিল তাদের নিজস্ব মুদ্রায় বাণিজ্য করতে সম্মত হয়েছে।
এই দুই ব্রিকস দেশের বার্ষিক বাণিজ্য ১৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। মূলত মার্কিন ডলারের ব্যবহার কমাতে এ পদক্ষেপ নেয় দেশ দুটি। চীনের অভিযোগ, বিশ্ববাজারে আধিপত্য বজায় রাখতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ডলারের অপব্যবহার করে।
ভারত সরকার বৈদেশিক বাণিজ্যে ডলারের ব্যবহার কমাতে ১ এপ্রিল থেকে একটি নতুন বৈদেশিক বাণিজ্য নীতি প্রণয়ন করেছে। ভারত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিচালনার জন্য রুপি ব্যবহার করার জন্য জোর দেবে।
বিকল্প মুদ্রা এবং লেনদেন ব্যবস্থার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধির সাথে সাথে অন্যান্য দেশের উপর মার্কিন ডলারের আধিপত্য আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এছাড়া ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার বৃদ্ধির কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশ যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এসআই