Ekhon TV :: এখন টিভি

ব্রয়লারের দামের প্রভাব চিকেন ফাস্টফুডে

অনেক দোকানে বিক্রি নেমে গেছে অর্ধেকে

১৬ মার্চ ২০২৩, ১১:৪১

ব্রয়লারের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে বিভিন্ন ফাস্টফুড, কাবাবের দোকান ও প্রক্রিয়াজাত চিকেন ফুডে। কোনো কোনো দোকানে বিক্রি নেমে গেছে অর্ধেকে। কেউ কেউ আবার- ক্রেতা ধরে রাখতে আগের দাম রেখেই পরিমাণ কমিয়ে দিচ্ছে খাবারের। 

আর ক্রেতারা বলছেন, দাম দ্বিগুণ বেড়ে যাওয়ায় সাধ্যের বাইরে মুখরোচক এইসব খাবার। 

পুরান ঢাকার রায়শা বাজার এলাকার অলি গলিতে সন্ধ্যা হলেই আগে দেখা যেত হরেক রকম মুখরোচক খাবারের লোভে মানুষের সমাগম। কিন্তু এখন সাজিয়ে রাখা এই খাবারগুলো ক্রেতার অপেক্ষায়। হঠাৎ করেই যেন পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। হতাশা তাই বিক্রেতাদের কন্ঠে।

এক হোটেল কর্মী বলেন, ‘সারাদিন কাজ করে ৫০০ টাকা রোজগার করে এক কেজি ব্রয়লার মুরগি যদি ২৫০ টাকায় কিনতে হয় তাহলে চাল, ডাল ও অন্য জিনিস কিনবো কিভাবে?

আরেক হোটেল কর্মী বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের মহাজনই অনেক সংকটে রয়েছেন। তিনি অনেক মাসেই আমাদের শ্রমিকদের বেতন দিতে পারে না।’

ক্লাউড ইলিভেনের স্বত্বাধিকারী সালমান ইসলাম রনি বলেন, ‘এর একটা বড় প্রভাব পড়বে সামনে, দেখা যাবে যে রেস্টুরেন্ট খুলে বসে আছি কিন্তু কোন ক্রেতা নেই।’

বিএফসির শাখা ব্যবস্থাপক এমডি. গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘বর্তমানে সব পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু ক্রেতার কাছে আমরা সেই তুলনায় দাম বাড়াতে পারিনি। ফলে প্রতিনিয়ত কোম্পানি লোকসান দিচ্ছে।’

মুরগির মাংশ প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় রেস্টুরেন্টে আসাই কমিয়ে দিয়েছেন ক্রেতারা। বিশেষ করে পরিবারের সব সদস্যদের নিয়ে যারা আগে সপ্তাহে কয়েকদিন বাইরে খেতে যেতেন, তারা বলছেন, সাধ আর সাধ্যের বেড়াজালে কমে গেছে তাদের বাইরের খাবারের প্রতি আগ্রহ। আবার খাবারের একই দাম রেখে খাবারের পরিমাণও কমিয়ে দিয়েছেন কোন কোন রেস্টুরেন্ট।

জমজমাট ফাস্টফুডের দোকানগুলো এখন অনেকটাই ফাঁকা। বিক্রি কমে যাওয়ায় কর্মী সংখ্যাও কমাতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে।

অনলাইনে খাবারের পেইজগুলোতেও এখন অর্ডার কমেছে। কথা হয় কয়েকজন ডেলিভারি ম্যানদের সঙ্গে।

তারা বলেন, ‘আগে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫টি অর্ডার আসলেও বর্তমানে মাত্র ১০ থেকে ১২টি অর্ডার আসছে।’

একইসাথে প্রক্রিয়াজাতকরন খাবারের দামও বেড়েছে । যেখানে এক প্যাকেট চিকেন নাগেটের দাম ছিল ১৮৫ টাকা, তা বেড়ে এখন ২০০ টাকা, একইভাবে এক প্যাকেট চিকেন সমুচা ১৯০ টাকা থেকে বেড়ে ২১০ টাকা, চিকেন স্ট্রিপস আগে ছিল ২৩০ টাকা, এখন তা বেড়ে ২৫০ টাকা, চিকেন সিঙ্গারা আগে ছিল ১১০ টাকা, তা বেড়ে এখন ১২০ টাকা, মালেশিয়ান চিকেস নাগেট ৮৫০ টাকা থেকে বেড়ে ১০০০ টাকা এবং চিকেন বার্গার ১২০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৫০ টাকা।

এজি ফুডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেহনুমা এহসান বলেন, ‘খাবারের দাম বাড়ায় খামারিরা এখন আর আগের মত মুরগি পালন করে না। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে, বর্তমানে মুরগির সরবরাহ অনেক কমে গেছে। এর ভুক্তভুগি হয়েছি আমরা। বর্তমানে মুরগি কিনে আমাদের আয় অনেক কম।’

ফাস্টফুড ব্যবসায়ীদের দাবি, বাজারে তদারকি বাড়িয়ে লাগাম টানা হোক মুরগির দামে। তা না হলে ধস নামতে পারে চিকেন নির্ভর ফাস্টফুড ও রেস্টরেন্ট ব্যবসায়। আর ভোক্তা বঞ্চিত হবেন প্রিয় খাবারের স্বাদ থেকে।

আকন

Advertisement
Advertisement
Advertisement