Ekhon TV :: এখন টিভি

ফুলে ফেঁপে উঠছে অস্ত্র বাণিজ্য

যুদ্ধের এক বছরে ইউক্রেনে ব্যাপক অস্ত্র সহায়তা

২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৫:২০

যুদ্ধের এক বছরে শুধু যুক্তরাষ্ট্রই ইউক্রেনকে সহায়তা দিয়েছে ১১ হাজার কোটি ডলারের ওপরে। যার বেশিরভাগই সামরিক। তাছাড়া ন্যাটোভুক্ত অন্যান্য দেশগুলোও করছেন সামরিক সহায়তা। আর এর মধ্য দিয়ে ফুলে ফেঁপে উঠছে তাদের অস্ত্র বাণিজ্য। পাল্লা দিয়ে রাশিয়াতেও বেড়েছে অস্ত্র উৎপাদন।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের এক বছরে আরও তুমুল হচ্ছে ভূমি দখল ও রক্ষার লড়াই। এর জেরে পৃথিবীতে দীর্ঘ হচ্ছে নানমুখী সংকট। তবুও যুদ্ধকে পুঁজি করে চাঙা হচ্ছে মরণাস্ত্র বাণিজ্য। গেলো বছর এই খাত থেকে রেকর্ড মুনাফা করেছে ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর অস্ত্র নির্মাতারা।

পরিসংখ্যান বলছে- যুদ্ধের শুরুতে ইউক্রেনের কাছে সোভিয়েত আমলের ২৫০টি এস- থ্রি হান্ড্রেড ক্ষেপণাস্ত্র থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটোভুক্ত ৩০টি দেশ হাজার হাজার কোটি ডলারের উন্নত অস্ত্র সরবরাহ করছে। যার মধ্যে 'নাসামস' ক্ষেপণাস্ত্র, হিমার্স' রকেট, টি-সেভেনটি টু মডেলের ২শ' ট্যাংক, হাজার খানেক ট্যাংকবিরোধী অস্ত্র এবং তুর্কিয়ের দেয়া সশস্ত্র ড্রোন অন্যতম। যেগুলোর একেকটির মূল্য ৩০ হাজার ডলার থেকে শুরু করে কোটি ডলারের ওপরে।

যুদ্ধে বৈশ্বিক সংকট হলেও আলোচনার মাধ্যমে তা বন্ধে এগিয়ে আসছে না কোনো দেশ। বরং ২০২৩ এ এসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উন্নত অস্ত্রের প্রত্যাশা যেমন বেড়েছে, তেমনি সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে ন্যাটোর সদস্য দেশগুলো। ইউক্রেনের যুদ্ধ বহরে যুক্ত হচ্ছে অত্যাধুনিক ট্যাংক, গোলাবারুদ ও ড্রোন।

সম্প্রতি ইউক্রেনকে ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার থেকে শুরু করে ১ কোটি ১০ লাখ ডলার মূল্যের উন্নত ট্যাংক দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ব্রিটেন, কানাডা, স্পেন, পোল্যান্ড ও ফ্রান্সসহ অন্যান্য মিত্র দেশগুলো। সব মিলিয়ে ৩২১টি ট্যাংক পাওয়ার প্রত্যাশায় দিন গুনছে ইউক্রেন। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে জার্মানির তৈরি বিশ্বের প্রথম সারির ট্যাংক হিসেবে পরিচিত লেপার্ড-টু ও যুক্তরাষ্ট্রের এম-ওয়ান আব্রামস ট্যাংক। তবে এসব ট্যাংক পেতে কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে ইউক্রেনকে। নিতে হবে প্রশিক্ষণও।

ট্যাংক ছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে সম্প্রতি মাত্র এক ডলারে গ্রে ঈগল ও রিপার ড্রোন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশটি। এ নিয়ে যুদ্ধের এক বছরে আড়াই হাজারের ওপরে ড্রোন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

ইউক্রেনকে এখন পর্যন্ত ১১ হাজার কোটি ডলারের বেশি সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যা অন্যান্য যে কোনো দেশের সহায়তার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। তাই যুদ্ধকে জিয়ে রাখার পেছনে মার্কিন মুল্লুককেই দোষারোপ করছে মস্কো।

তবে ইউক্রেনের বহরে উন্নত ট্যাংক-কামান যুক্ত হতে যাওয়ার খবরে মোটেও দুশ্চিন্তায় নেই বিশ্বে সামরিক শক্তিতে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা রাশিয়া। কারণ নিজেরাও বাড়িয়েছে অস্ত্র উৎপাদন। এরইমধ্যে দেশ পরিচালনার মোট বাজেট থেকে এক তৃতিয়াংশ খরচ করেছে যুদ্ধের জন্য। শুধু ৯ মাসেই ব্যয় হয়েছে ৮২ হাজার কোটি ডলার।

এ অবস্থায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আরও চড়াও হওয়ার শঙ্কা বাড়ছে। এতে বিশ্ব অর্থনীতি চাপে পড়লেও মুনাফা বাড়ানোর আশায় হিসাব কষছে মারণাস্ত্র তৈরি ও রপ্তানিকারক রাষ্ট্রগুলো।

আকন

Advertisement
Advertisement
Advertisement