
বেলারুশে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করবে রাশিয়া

স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ইস্কান্দার এরই মধ্যে বেলারুশে পাঠিয়েছে মস্কো
২৬ মার্চ ২০২৩, ১৭:০৯
বিদেশে এখন ডেস্ক, এখন টিভি
নব্বইয়ের দশকের পর দেশের বাইরে প্রথম বেলারুশে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করতে যাচ্ছে রাশিয়া। এ বিষয়ে প্রতিবেশী দেশ দু'টি চুক্তিবদ্ধ হয়েছে বলে শনিবার (২৫ মার্চ) এ খবর নিশ্চিত করেছেন খোদ রুশ প্রেসিডেন্ট। জানিয়েছেন, বিশেষ অস্ত্রাগারটির নির্মাণকাজ শেষ হবে জুলাইয়ের শুরুতেই, অর্থাৎ মাস চারেকের মধ্যে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম রাশিয়া ওয়ানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ভ্লাদিমির পুতিন জানান, স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ইস্কান্দার এরই মধ্যে বেলারুশে পাঠিয়েছে মস্কো। পারমাণবিক বা প্রচলিত যেকোনো যুদ্ধাস্ত্র বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রটি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন যে ইউক্রেনে ক্ষয়িষ্ণু ইউরেনিয়াম পাঠাবে যুক্তরাজ্য। এটিও পারমাণবিক প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত। এর প্রেক্ষিতেই বেলারুশের সঙ্গে আলোচনায় বসি আমরা। প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোও অনেকদিন ধরে তার দেশে রুশ কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের কথা বলছিলেন।
সাক্ষাৎকারে পুতিন আরো বলেন, পারমাণবিক যুদ্ধাস্ত্র বহনে ১০টি বিমানের আধুনিকায়ন করতে বেলারুশকে সাহায্য করেছে রাশিয়া। রি-কনফিগারড নতুন বিমান চালাতে বেলারুশিয়ান পাইলটদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কাজও শুরু হবে আগামী মাসেই।
রাশিয়ার পশ্চিমে অবস্থিত ও মস্কোর ঘনিষ্ঠতম মিত্র বেলারুশ, ইউক্রেনের উত্তর সীমান্তের প্রতিবেশী। ইউক্রেনে গেল বছর ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভিযান শুরু করতে রাশিয়াকে সহযোগিতা করেছিল বেলারুশ। সে সময় বেলারুশ হয়েই ইউক্রেনে প্রবেশ করে রুশ সেনারা। শঙ্কা বাড়ছে যে ইউক্রেনে শিগগিরই বড় ধরনের স্থল অভিযান চালাতে আবারও বেলারুশকে ব্যবহার করবে রাশিয়া; কিংবা যুদ্ধে ক্রেমলিনের সেনাদের সাহায্যে নিজস্ব সেনা পাঠাবে মস্ক।
ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কেন মিত্র দেশগুলোর ভূখণ্ডে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন করে রেখেছে? তাদের সেনা, পাইলটদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, প্রয়োজনে কীভাবে অস্ত্র ব্যবহার করতে হবে- সেসব শেখাচ্ছে। কেন? আমরা ঠিক করেছি যে আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা মেনে আমরাও একই পথে এগোবো।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত পতনের মাধ্যমে জন্ম নেয়া চার স্বাধীন রাষ্ট্র রাশিয়া, ইউক্রেন, বেলারুশ ও কাজাখস্তানের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র থাকলেও ১৯৯২ সালে সব যুদ্ধাস্ত্র রাশিয়ার কাছে রাখার চুক্তিতে সম্মতি দেয় বাকি তিন দেশ। এরপর থেকে বেলারুশের নিজস্ব ভূখণ্ডে কোনো পারমাণবিক কোনো অস্ত্র ছিল না।
ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার দূরত্ব ক্রমশ বাড়ছে। রাশিয়া পারমাণবিক হামলা চালাতে পারে বলে জল্পনাকল্পনার মধ্যেই তিন দশকের বেশি সময় পর বেলারুশে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের কথা জানালেন পুতিন। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সিএনএনকে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, এটি রাশিয়ার কৌশলগত পদক্ষেপ। তবে মস্কো পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে না বলেও আশ্বস্ত করেন এই মার্কিন কর্মকর্তা।
এফএইচ