Ekhon TV :: এখন টিভি

মার্কিন ব্যাংকিং খাত

কয়েক ঘণ্টার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি ব্যাংক বন্ধ

ঈষিতা ব্রহ্ম , এখন টিভি

১৩ মার্চ ২০২৩, ১৮:১০

গভীর গিরিখাদে মার্কিন ব্যাংকিং খাত। স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে এখন। সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক বন্ধ হওয়া নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে আরও একটি দুঃসংবাদ.। প্রযুক্তিখাতে বিনিয়োগ আর ঋণ দেয়ার অন্যতম শীর্ষ ব্যাংকটির পথ ধরেছে আরও একটি মার্কিন জনপ্রিয় ব্যাংক!

'সিগনেচার ব্যাংক' নামে নিউইয়র্কভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব নিয়েছে ফেডারেল ডিপোজিট ইন্সুরেন্স করপোরেশন। নিউইয়র্কের স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলছে, গেলো বছর এই ব্যাংকের সম্পদ ছিলো ১১ হাজার কোটি ডলার, গ্রাহকদের সঞ্চয় ছিলো ৮ হাজার ৮শ' কোটি ডলার। ২০০৮ সালের অর্তনৈতিক মন্দার পর একসঙ্গে দুই ব্যাংকের এমন পতনের কারণ হিসেবে অপরিকল্পিত সুদের হার অনেকাংশে দায়ী বলে মত অর্থনীতিবিদদের।

জেপি মরগান চ্যাজের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ অ্যান্থনি চ্যান বলেন, যখন গচ্ছিত অর্থে কোন ব্যাংক নির্ভরশীল হয়ে যায়, ওই ব্যাংক ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়। এরমধ্যে যদি ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার দফায় দফায় বাড়ায়, পরিস্থিতি আরও খারপা হয়। আবার আপনি যতো চাচ্ছেন, ততো ঋণ স্টার্টআপগুলো নিচ্ছে না। তাহলে আপনি ঝড়ের মধ্যে পড়ে গেলেন। যখনই বিনিয়োগকারীরা সেটা জানতে পারলো, তারাও অস্থির হয়ে গেলো। যদিও ব্যাংক থেকে অর্থ সরিয়ে নেয়ার সুযোগে গ্রাহকরা স্বস্তি পাচ্ছে।

কয়েকদিনের ব্যবধানে দ্বিতীয় ব্যাংক বন্ধ হওয়ার পর জরুরি বৈঠকে বসেন মার্কিন রাজস্ব সচিব জেনেট ইয়েলে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান জেরেমি পাওয়েল ও ফেডারেল ডিপোজিট ইন্সুরেন্স করপোরেশন প্রধান মার্টিন গ্রানবার্গ। এরপর এক যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে গেলেও গ্রাহকদের ভয়ের কোনো কারণ নেই। সোমবার থেকেই নিজেদের গচ্ছিত অর্থ তোলার সুযোগ পাবেন আমানদাররা। একইভাবে বন্ধ হওয়া সিগনেচার ব্যাংকের গ্রাহকদেরও গচ্ছিত অর্থ নিরাপদে থাকবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ব্যাংকের ওপর গ্রাহকদের আস্থা রাখতে হবে। যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যাংকের হঠাৎ পতন নড়বড়ে করে দিয়েছে মার্কিন ব্যাংকিং খাতকে।

চ্যান যোগ করেন,সিলিকন ভ্যালির দেউলিয়া হওয়ার ঘটনা এটাই প্রমাণ করে, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের ব্যবস্থাপনা নীতি ব্যর্থ হয়েছে। মার্কিন সরকার সুদের হার নিয়ে যথেষ্ট আগ্রাসী হয়ে গেছে। বিশ্বের আর্থিক ব্যবস্থাই ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেছে। সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং ব্যবস্থার বেহাল দশা হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ে গেছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, পুরো বিশ্বের ব্যাংকিং ব্যবস্থার মধ্যে যেন নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে, সেই চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

এই কঠিন সময়ে, অন্য আর কোনো ব্যাংক যেন দেউলিয়া না হয়, সেজন্য ব্যাংকগুলোর তহবিল সমৃদ্ধ করতে সহযোগিতা করবে জো বাইডেন সরকার। সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী বছরের জন্য ব্যাংকগুলো জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের কাছ থেকে ঋণ নিতে পারবে। যদিও ফেডারেল রিজার্ভের উচ্চ সুদহারের কারণে বিনিয়োগ কমায় ব্যাংকগুলোর এই দুর্দশা বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

ব্যাংকিং খাতের এই সংকটময় সময়ে বিনিয়োগ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। একে একে যখন বিভিন্ন মার্কিন প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাই করছে সেখানে ব্যাংকের দেউদিয়াত্বপনা আরও অন্ধকার নামাচ্ছে সার্বিক অর্থনীতিতে।

ডব্লিউএইচ

Advertisement
Advertisement
Advertisement