Ekhon TV :: এখন টিভি

ইন্টারনেটের কারণে এখন সবকিছুই হাতের মুঠোয়। অফিস-আদালতের যাবতীয় কাজ অনলাইনে করা যায়। প্রযুক্তির এই উন্নয়নে নেত্রকোনার তরুণরাও পিছিয়ে নেই। অনেকেই অনলাইন প্রযুক্তিকে আয়ের পথ হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

সনজিত সাহা একজন ফ্রিল্যান্সার। প্রত্যন্ত গ্রামে বসে নানা প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি এখন ঘরে বসেই মাসে লাখ লাখ টাকা আয় করেন।

ফাইবার, আপওয়ার্কসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে একজন সফল উদ্যোক্তা তিনি। বিভিন্ন আমেরিকান এজেন্টদের সাথে গ্রামে বসেই কাজ করেন। গত কয়েক বছরে এ থেকে তার আয় হয়েছে ৮০ হাজার ডলার।

ফ্রিল্যান্সার সনজিত সাহা বলেন, গার্মেন্টস সেক্টর থেকে যেভাবে দেশে রেমিট্যান্স আসে, আমিও চাই এই গ্রামে ফ্রিল্যান্সিংয়ের এমন একটি খাত গড়ে উঠুক।

সনজিতের মতোই ফ্রিল্যান্সিং নানা প্লাটফর্মের উদ্যোক্তা আল আমিন। প্রত্যন্ত গ্রামে ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠার পর তাকে আর পিছনে তাকাতে হয়নি। কম্পিউটার ইন্টারনেটের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে এখন তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার। তিনি জেলায় শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তাও নির্বাচিত হয়েছেন।

আল আমিন জানান, গ্রামের সব জমি খারিজ থেকে শুরু করে এনআইডি সংশোধন বা পাসপোর্ট নিবন্ধন কাজ করে থাকেন।  তিনি এখন গ্রামে বসেই কাজ করতে পারছেন। আগে এ ধরনের কাজ করতে উপজেলায় যেতে হতো। এই সেবা পেয়ে গ্রামবাসীরাও সন্তুষ্ট৷

ইন্টারনেটের কল্যাণে অর্থনীতিতে এসেছে অনেক পরিবর্তন। চাকরি ছেড়ে অনলাইন প্লাটফর্মে ফ্রিল্যান্সিং এ ঝুঁকছেন তরুণরা।

গ্রামে বসেই পাসপোর্ট, ভোটার আইডি কার্ডের আবেদনসহ দলিলের নামজারির মত জটিল সব কাজ মুহূর্তে সমাধান হচ্ছে। এমনকি এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রামে বসেই একজন গ্রাহক সহজেই দিতে পারছেন বিদ্যুৎ বিল।

তেমনি বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতাসহ শিক্ষা উপবৃত্তির টাকাও উত্তোলন করতে পারছেন গ্রাহকরা। জেলায় ইউনিয়ন-ভিত্তিক এজেন্ট ব্যাংকিং সেন্টার রয়েছে ৮১টি। এখান থেকেও একজন উদ্যোক্তার প্রতি মাসে আয় ৪০ হাজার টাকা।

নেত্রকোনা ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের জেলা ম্যানেজার আব্দুল মোতালেব জানান, তাদের এখানে ৮১টি এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মধ্যে অনেকেই খুব ভালো করছে। শুধু ব্যাংকিং সেবা দিয়েই প্রতি মাসে প্রায় ৪০ হাজার টাকার মত আয় করছে।

পুরুষের পাশাপাশি  নারীরাও ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের কাজের সুযোগ হয়েছে। এখন পুরুষের সাথে সমান তালে কাজ করছেন নারীরা। ডিজিটাল সেন্টারে বসে প্রতি মাসে আয় করছেন অন্তত ২০ থেকে ২৫ হাজার।

একজন নারী উদ্যোক্তা বলেন, আমাদের মতো নারীরাও অনলাইন সেবা দিয়ে অর্থ উপার্জন করতে সক্ষম। এই অনলাইন পরিষেবাগুলির মধ্যে রয়েছে জন্ম নিবন্ধন, কলেজে ভর্তির আবেদন ইত্যাদি।

জেলা প্রশাসক বলছেন, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে কাজের মাধ্যমে যেমন বেকারত্ব দূর হচ্ছে তেমন গ্রামীণ জনপদে সহজেই পৌঁছে যাচ্ছে ডিজিটাল সেবা।

নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিস বলেন, চাকরি না করে অনেকেই ডিজিটাল প্রযুক্তি জ্ঞান অর্জন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। আর তারা বিভিন্ন জনকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। ফলে দেশে তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞান ছড়িয়ে পড়ছে।

ডিজিটাল সেন্টারের পাশাপাশি গ্রাফিক্স, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, ডাটা এন্ট্রিসহ অনলাইনেই বিভিন্ন কাজ করা যাচ্ছে। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিক্ষার্থী। অর্জিত এই আয়ে যেমন স্বাবলম্বী হচ্ছেন, তেমনি চাঙা হচ্ছে দেশের অর্থনীতিও।

এসআই

Advertisement
Advertisement
Advertisement