
প্রেম, বিরহ ও দ্রোহের গানে নজরুল

বাংলার সঙ্গীতে অমর নজরুল
২৬ মে ২০২৩, ১৫:০৮
মো. ইমরান , এখন টিভি
যখন শাসকের শোষণ তার মাত্রা ছাড়িয়ে যায় তখন তিনি রচনা করলেন, কারার ওই লৌহ কপাট, সেই দ্রোহের কবি প্রেমিকার খোঁপায় তারার ফুল দিতেও ভুলেননি, নিজের থেকেও আপন যে জন তাকে যে নিজের মাঝেই খুঁজে নেয়া যায় তিনিই তা শিখিয়েছেন। রমজান শেষে যে খুশির ঈদ আসে তা যেন অধুরাই থেকে যায় তার গান ছাড়া আবার শ্রীকৃষ্ণ ভজন ভক্তদের মনে আনে আত্মিক প্রশান্তি। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম সঙ্গীতের আশ্রয়ে সৃষ্টি করেগেছেন প্রেম, বিদ্রোহ ও আরাধনার সুর।
বিদ্রোহী, কাণ্ডারি হুশিয়ার ও কারার ওই লৌহ কপাট- শোষিতের পক্ষে আর শোষনের বিরুদ্ধে নজরুল রচনা করেছেন এরকম অসংখ্য কবিতা। প্রতিবাদের সুর যেন নজরুলেই সৃষ্টি।
তারই লেখা কারার ওই লৌহ কপাট- জীবন থেকে নেয়া চলচ্চিত্রে জহির রায়হান ব্যবহার করেন। একই গান ভিন্ন আঙ্গিকে প্রস্তুত করে জনপ্রিয় ব্যান্ড আর্টসেল। কাণ্ডারি হুঁশিয়ারকেও রক ধারায় পরিবেশন করে এই ব্যান্ড। ’দাদরা’ তালের ‘নতুনের গান’ চল চল চল- দেশের রণসঙ্গীত হিসেবে নির্বাচিত হয়। এই গানটিকে ভিন্ন রূপ দেন সঙ্গীত শিল্পী রাফা।
যে কবি দ্রোহের, বিপ্লবের, পরিবর্তনের- তিনিই লেখেন প্রেমের কবিতা। আলগা করো গো খোঁপার বাধঁন বলে, সেই খোঁপায় পরালেন তারার ফুল। শুকনো পাতার নূপুর পায়ে, দূরদ্বীপবাসিনীদের আবেগ প্রকাশ পায় নজরুলের গানে। প্রেমের গানগুলো এভাবেই হয় অমর, তৈরি হয় নতুন নতুন সংস্করণও।
শ্যামা সঙ্গীত ও শ্রীকৃষ্ণ ভজনও রচনা করেছেন নজরুল। ভারতীয় ক্ল্যাসিকাল ধারার রাগ-রাগিনী সম্বলিত সেসব গান দুই বাংলায় অদ্বিতীয়। নজরুলের শ্যামাসঙ্গীত জনপ্রিয় হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ ছিল, আবেগের গভীরতা।
হামদ, নাত, গজলে নজরুল অনন্য। তার সৃষ্টি রমজানেরো রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ- এই গান ছাড়া যেন বাঙালির ঈদ অসম্পূর্ণ থেকে যায়। জীবনের শুরুর দিকে ভবঘুরে হয়ে বেড়ান দেশে-বিদেশে, পরিচিত হন ভীনদেশি সুরের সাথে সেই সুরে তৈরি করেন রসূলের বন্দনা ‘ত্রিভুবনের প্রিয় মুহাম্মদ।’ কামলিওয়ালা গজলেও প্রকাশ পায় নজরুলের নবীপ্রেম। মৃত্যুর পরের শেষ ঠিকানাটা কোথায় হবে তাও লিখেছেন গানে।
সঙ্গীতে নজরুলের সৃষ্টি কোনো নির্দিষ্ট ধারায় বাধা যায় না। নদীর মতো প্রবাহমান তার গান, চিরন্তন যা বয়ে চলে মানুষের হৃদয়ে। যে হৃদয় শুনতে পায় প্রেম ও দ্রোহের বাণী পিয়াসী মনের বাসনায়।
আইকে