
দাউদ ইব্রাহীম, যার নাম শুনেই ঢোঁক গিলতো পুরো ভারত!

মুম্বাই মাফিয়া: পুলিশ ভার্সেস আন্ডারওয়ার্ল্ড
১৫ মার্চ ২০২৩, ১৭:৪৭
এখনটিভি ডেস্ক, এখন টিভি
অপরাধকে তিনি দিয়েছিলেন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ। ভারতীয় অপরাধ জগতকে পুরো বিশ্বের কাছে পরিচয় করিয়েছিলেন। ৯০ দশকে তিনি হয়ে উঠেছিলেন আন্ডারওয়ার্ল্ডের অঘোষিত সম্রাট। দাউদ ইব্রাহীম, ভারতবর্ষে আজো একটি রহস্যময় নাম।
মুম্বাই থেকে দুবাই কাঁপিয়ে বেড়ানো এই গ্যাংস্টার পাঁচ হাজার সদস্য নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন তার রাজত্ব। যেখানেই অর্থের গন্ধ পেয়েছেন সেখানে থাবা বসিয়েছেন। এই থাবা থেকে বাদ যায়নি সিনেমা পাড়াও। বলিউডে প্রতিবছর গড়ে ২৫০টি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। এ থেকে ভারত সরকারের আয় হয় ৫০ বিলিয়নের বেশি রাজস্ব। আর একারণেই মাফিয়াদের নজরও বরাবরই মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির দিকে।
প্রখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক এবং টি সিরিজের কর্ণধার গুলশান কুমারের কাছে ১০ কোটি রুপি চাঁদা দাবি করেছিল দাউদের সহযোগী আবু সালেম। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় আবু সালেমের লোকজনের হাতে প্রাণ দিতে হয় এই সঙ্গীতঙ্গকে।
তারপরও বলিউড তারকাদের সাথে এই দাউদের ঘনিষ্ঠতা ছিল খোলা বইয়ের মত। বিশেষত বলিউডের ভাইজান সালমান খান, অনিল কাপুর, ঋষি কাপুর এবং সঞ্জয় দত্তকে বহুবার এক সঙ্গে দেখা গেছে এই গ্যাংস্টারের সাথে। ৯০ দশকের বলিউড সুন্দরী মন্দাকীনি এবং অনিতা আইয়ুবের সাথে প্রেমেও জড়িয়েছেন এই গ্যাংস্টার। দাউদের অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেছিলেন সনু নিগম, অলকা ইয়াগ্নিক ও আনু মালিকসহ ভারতের খ্যাতিমান শিল্পীরা। যেন নিজ মন্ত্রবলে বশ করে রেখেছিলেন পুরো বলিউডকে।
মায়ানগরী মুম্বাইয়ের অপরাধ জগত সবসময়েই বলিউডের কাছে একটা আকর্ষণীয় বিষয় হয়ে উঠেছে। 'ডি কোম্পানি', 'শুট আউট এট লোখান্ডওয়ালা', 'শুট আউট এট ওয়াদালা', 'ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন মুম্বাই', ব্ল্যাক ফ্রাইডে'-র মতো অনেক সিনেমা হয়েছে, যেখানে বাস্তবের খলনায়ক দাউদ ইব্রাহিমই হয়ে উঠেছেন সিনেমার বিষয়বস্তু।
দাউদের অপরাধের মাত্রা ছাড়ানোয় সক্রিয় হয়ে ওঠে মুম্বাই পুলিশ। একে একে পুলিশের হাতে এনকাউন্টারে মারা পড়তে থাকে দাউদের সঙ্গী সাথীরা। বিশ্বের শীর্ষ দশ ওয়ান্টেড ক্রিমিনালের তালিকায় তিন নম্বরে উঠে আসে দাউদের নাম।
দাউদ ইব্রাহিমের নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে করা পুলিশি অভিযানের আদ্যেপান্ত নিয়ে ৬ জানুয়ারি নেটফিক্সে মুক্তি পায় মুম্বাই মাফিয়া: পুলিশ ভার্সেস আন্ডারওয়ার্ল্ড। এক অন্ধকারাচ্ছন্ন মুম্বাইয়ের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই ক্রাইম ডকুমেন্টারি ফিল্মে। আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডনরা কী ভাবে ত্রাস সৃষ্টি করত, এনকাউন্টার স্পেশালিস্টরা কী ভাবে তাদের অভিযান 'অপারেট' করতেন, সবই আছে এই ডকুতে।
৯০ দশকের শেষের দিকে ছিন্নভিন্ন হতে থাকে দাউদ সাম্রাজ্য। কমতে থাকে তার বহুদিনের আগ্রাসন। বাস্তবে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রামাণ্য চিত্রায়নে মুম্বাইয়ের আন্ডারওর্য়াল্ড ডনদের ক্ষমতা নস্যাতের চিত্র উঠে আসে। তবে মোস্ট ওয়ান্টেড লিস্ট থেকে এখনো বাদ পড়েনি দাউদ ইব্রাহিমনের নাম।
কেএফ