
হজের নিবন্ধন কেন কম হচ্ছে?
নিজস্ব প্রতিবেদক, এখন টিভি
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৪:৫৫
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হবে পবিত্র হজ। সে হিসেব অনুযায়ী চলছে নিবন্ধন প্রক্রিয়া। ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে হজযাত্রীদের চূড়ান্ত নিবন্ধন শুরু হয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি নিবন্ধন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বিকাল ৪ টা পর্যন্ত হজের নিবন্ধন হয়েছে মাত্র ১৭,৯৭০ জন। যে কারণে আরও ৫দিন সময় বাড়িয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
অন্যান্য বছর হজ মৌসুমে হজ এজেন্সি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সিগুলো এই সময় ব্যস্ত সময় পার করলেও মতিঝিলের ট্র্যাভেল এজেন্সিগুলোতে একেবারেই ভিন্ন চিত্র।
১৬১ জন প্রাক নিবন্ধনকারীর মধ্যে এবার মাত্র ২০ জন নিবন্ধন করেছে বলে জানান প্যান ব্রাইট ট্রাভেল লিমিটেড এজেন্সির কর্ণধার মো. রুহুল আমিন। তিনি বলেন, হজ প্যাকেজের খরচ, বিমানের আকাশচুম্বী ভাড়ার কারণে এবার অনেকেই হজে যেতে পারছেন না।
তিনি আরো বলেন, হজে ঢাকা শহরের তুলনায় অধিক গ্রামের লোকেরা যান। গ্রামের একটা পরিবারের চারজন লোক গেলে ৭ লাখ করে চার জনের ২৮ লক্ষ টাকা খরচ হয়। সে দুইটা জমি বিক্রি করেও এই টাকা কাভার করতে পারবে না।
রুহুল আমিন বলেন, একদিকে বাংলাদেশের সরকার যে রকম টিকিটের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, সৌদি সরকারও তাদের আনুষঙ্গিক খরচগুলো আগের তুলনায় দশগুলোর চেয়েও বেশি বাড়িয়ে দিয়েছে। এসব কারণে মানুষ নিরুৎসাহিত হচ্ছে।
এছাড়াও এবার ১২ বছরের কম বয়সীরা হজ করতে পারবে না বলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় অনেক পরিবারই তাদের নিবন্ধন বাতিল করেছে বলেও জানান তিনি।
তবে বেসরকারি হজ এজেন্সি মালিকদের সংগঠন হাব বলছে প্রতিবছরই শুরুর দিকে নিবন্ধন কম হয় এবং সময় বাড়ানোর পরে এই নিবন্ধন সংখ্যা বেড়ে যায়।
হাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মাওলানা ইয়াকুব শরাফতী বলেন, নিবন্ধনের সময় বাড়ানো এটা কিন্তু যথারীতি নিয়ম। ধারাবাহিকভাবে নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হয়। এটা কিন্তু এ বছরের জন্য নয়, প্রতিবছরই নিবন্ধন প্রথম দিকের স্লো হয় শেষের দিকে বেশি হয়।
এবার হজযাত্রীদের খরচ বেড়ে যাওয়ার পেছনে এয়ারলাইন্সের অতিরিক্ত ভাড়াকে দায়ী করে হাব। ভাড়া নির্ধারণের দায়িত্ব শুধু বিমান বাংলাদেশকে না দিয়ে বিমান পরিবহন বিশেষজ্ঞ সহ টেকনিক্যাল কমিটি দ্বারা বিমান ভাড়া নির্ধারণের আহবান জানায় হাবের সহ সভাপতি মাওলানা ইয়াকুব শরাফতী।
তিনি বলেন, বিমান একটা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, আমরাও চাইবো বিমান লাভ করুক। ওনারা ব্যবসায় দশ টাকার টা ১০০ টাকা করবে এটা হওয়া উচিত নয়। লাভের পরিমাণ কি হবে এটা নির্ণয় করার জন্য একটা এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ টেকনিক্যাল কমিটি দ্বারা মূল্য নির্ধারণ করার জন্য আমাদের আবেদন।
এ বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে একটি মাত্র প্যাকেজে খরচ হবে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা। গত বছরের তুলনায় এবার খরচ বেড়েছে এক লাখ ৭০ হাজার ৫৭২ টাকা। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে এবার সর্বনিম্ন খরচ হবে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা।
হজের খরচ যদি কমানো না হয় তাহলে এবার একদিকে যেমন হজযাত্রীর সংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসবে তেমনি হজ এজেন্সি ব্যবসায় বড় ধরণের ধস নামারও আশঙ্কা প্রকাশ করছে ট্রাভেল এজেন্সিগুলো।
এফএইচ