
দুবাইর মতো আন্তর্জাতিক এভিয়েশন হাব হবে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী

দুবাই'র মতো আন্তর্জাতিক এভিয়েশন হাব হবে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮:২৫
এখনটিভি ডেস্ক, এখন টিভি
দেশের ভৌগলিক অবস্থানগত সম্ভবনা এবং সরকারের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামীতে বাংলাদেশ হবে আন্তর্জাতিক এভিয়েশন গেটওয়ে এবং প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে যোগাযোগের সেতুবন্ধন।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) গণভবনে ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল সম্প্রসারণ’ প্রকল্প বিষয়ক উপস্থাপন অবলোকনকালে তিনি এ কথা বলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
ভৌগোলিক অবস্থান কাজে লাগিয়ে দেশকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যেতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ, কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীতকরণের চলমান কাজের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কক্সবাজার বিমানবন্দরকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিমানের রিফুয়েলিংয়ের জন্য এখন যেমন সবাই দুবাইকে গেটওয়ে হিসেবে ব্যবহার করে কক্সবাজারও সেরকম গেটওয়েতে পরিণত হবে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক রুটে রিফুয়েলিংয়ের জন্য কক্সবাজার কম দূরুত্বের মধ্যে পড়বে, ঘুরে যেতে হবে না। সরাসরি কক্সবাজার থেকে তারা এই সুবিধা নিতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, কক্সবাজার বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন ও রানওয়ে সম্প্রাসারণের কাজ শেষ হলে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলো এখানে আসবে এবং কক্সবাজার একটি আন্তর্জাতিক এভিয়েশন গেটওয়ে হয়ে উঠবে।
রিফুয়েলিংয়ের জন্য আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলো কক্সবাজার এলে দেশের আয় বৃদ্ধি পাবে জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, বিমানবন্দরের সব কিছু ডিজিটালি পরিচালিত হবে। যাতে অতি দ্রুত ও সহজে মানুষ আন্তর্জাতিক মানের সেবা পেতে পারে।
এসময় ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের হালনাগাদ তথ্য প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (সিভিল এভিয়েশন) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান। তিনি জানান, আগামী অক্টোবরে টার্মিনালটি উদ্বোধনের জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হবে।
ইতিমধ্যে তৃতীয় টার্মিনালের ৬১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে উল্লেখ করে সিভিল এভিয়েশন চেয়ারম্যান জানান, উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আন্তর্জাতিক মানের অত্যাধুনিক সেবা দিতে বিমানবন্দরের অপারেশন এবং মেইনটেন্যান্সের দায়িত্ব একটি জাপানি কোম্পানিকে দেওয়া হবে।
ডলারের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রকল্প ব্যয় ২২ হাজার কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২৭ হাজার কোটি টাকা হতে পারে বলেও জানান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান। তবে ব্যয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা এবং দক্ষতাও বাড়ানো হবে।
এছাড়া রাডার কেনার বিষয়ে ফ্রান্সের রাডার প্রস্তুতকারী কোম্পানি থ্যালাস-এর সাথেও আলোচনা হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী রাডার স্থাপনের কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন রাডার স্থাপনের ফলে এভিয়েশন সেক্টরে আয় বাড়বে এবং এটা থেকে ভালো রিটার্ন আসবে। কারণ তখন বাংলাদেশের ওপর দিয়ে চলাচল করা বিমানগুলো ট্র্যাক করা সহজ হবে এবং তাদের কাছ থেকে রিকয়ার্ড ফি এবং সার্ভিস ফি পাওয়াও সহজ হবে।
শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের সঙ্গে রাডার উদ্বোধন করা হবে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানান সিভিল এভিয়েশন চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান। বলেন, ২০২১ সালের অক্টোবরে নতুন রাডার স্থাপনের প্রকল্পটি নেওয়া হয়। যেটি ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ করার সম্ভাব্য সময় ধরা হয়েছে। তৃতীয় টার্মিনাল এবং রাডার দুইটা একই সময় উদ্বোধন করা হতে পারে।
জানা গেছে, রাডারের বিস্তৃতি ভারত ও মিয়ানমার থেকে পাওয়া সমুদ্র সীমা পর্যন্ত।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন।
এমএস