Ekhon TV :: এখন টিভি

কয়লা আমদানি বন্ধ থাকায় স্থবির হয়ে পড়েছে হালুয়াঘাটের গোবরাকুড়া ও কড়ইতলি স্থলবন্দর। ভারতের মেঘালয়ে আইনী জটিলতায় এখানে কয়লা আসছে না বলে জানান আমদানিকারকরা। 

এছাড়া পুরোনো এলসি'র কয়লাও দিচ্ছেনা ভারতের ব্যবসায়ীরা। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন আমদানিকারকরা। 

এদিকে বন্দরে নান্দনিক অবকাঠামো নির্মাণ হলেও ইমিগ্রশেন সুবিধা চালু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা। 

স্থলবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, কয়লা আমদানী বন্ধ থাকায় বিরাণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে হালুয়াঘাটের গোবরাকুড়া ও কড়ইতলি স্থলবন্দর। বন্দরের আমদানীকারকদের তালাবদ্ধ অফিসের সামনে এখন আর নেই মানুষের জটলা। নেই শ্রমিকদের হাকডাক।

২০১২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করা বন্দরের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২০ সালে। সম্পূর্ণ নির্মাণ কাজ শেষে গত বছরের জুনে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেয় নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান। দুটি প্রশাসনিক ভবন, ইর্য়াড, চারটি ওয়ে ব্রীজ স্কেল, দুটি ওয়্যারহাউস, ওয়াচ টাওয়াারসহ নান্দনিক অবকাঠামোয় বন্দর দুটি পেয়েছে নতুন রূপ।

গোবরাকুড়া ও কড়ইতলি বন্দরে শুধুমাত্র কয়লা আসে ভারতের মেঘালয় থেকে। ভারতে আইনি জটিলতায় এই স্থলবন্দরে কয়লা আমদানি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি থেকে কয়লা আমদানি শুরু হলেও ফের বন্ধ হয়ে যায় ২ ফেব্রুয়ারী। কয়লা না আসায় স্থবির হয়ে পড়েছে বন্দরের কার্যক্রম। নেই প্রতিদিনের চিরচেনা কর্মচাঞ্চল্য। দীর্ঘদিন ধরে এলসি'র বিপরীতে কয়লা না পাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন আমদানিকারকরা।

আমদানিকারকরা বলেন, ‘মাঝে মাঝে কয়লা ভারত থেকে দেয় আবার বন্ধ রাখা হয়। এভাবে চলতে থাকায় যারা আমদানিকারক রয়েছে তাদের অবস্থা এখন খুবই খারাপ। এছাড়া এখানের শ্রমিকরাও মানবেতর জীবনযাপন করছেন।’

এদিকে কয়লা না আসায় বেকার হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার শ্রমিক। কাজ না থাকায় ভোগান্তিতে বন্দর নির্ভর শ্রমিকেরা। অনেকেই এলাকা ছেড়ে যোগ দিয়েছেন অন্য কাজে।

কয়লা আমদানি চালুর পাশাপাশি সব ধরনের পণ্য যেন এই বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি করা যায় তার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা।

আমদানীকারক সম্রাট ঘোষ বলেন, ‘আমাদের দাবি হচ্ছে সারাবছর যেন এখান থেকে আমদানি-রপ্তারি চালু থাকে।’

আমদানীকারক বিকাশ সরকার বলেন, ‘২০১৪ সাল থেকে ভারতে পরিবেশবাদিদের একটা মামলার কারণে এখান থেকে আমদানি-রপ্তানি অনেকটাই বন্ধ রয়েছে।’

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট আমদানী-রপ্তানীকারক গ্রুপের তথ্য ও প্রচার সম্পাদক রাজিব কুমার দত্ত বলেন, ‘প্রায় ৪৯ হাজার মেট্রিক টন পণ্যের এলসি আটকে আছে। এখন যদি বাংলাদেশ সরকার এবিষয়ে সুদৃষ্টি দেন তাহলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে।’

এদিকে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন না হলেও গত বছরের জুন থেকে বন্দরে স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে। এই বন্দর দিয়ে কাঠ, কয়লা, তাজা ফলমুল, পেয়াজ, রসুন, আদাসহ ২৮ ধরনের পণ্য আমদানি-রপ্তানির অনুমতি থাকলেও আমদানি হয় শুধুমাত্র কয়লা।

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট গোবরাকুড়া-কড়ইতলী স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এবছর শুধু কয়লাই আমদানি হয়েছে, অন্যকোন পণ্য এখান থেকে আমদানি ও রপ্তানি হয়নি।’

হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা হাসান বলেন, ‘শুধুমাত্র পণ্য আমদানিতে মনযোগ না দিয়ে এই এলাকার যেসব পণ্য রপ্তানি করা যায় সেদিকে খেয়াল দিলে আমার মনে হয় এই অঞ্চলের জীবনমানে অনেকটাই পরিবর্তন হবে।’

এক হাজারেরও বেশি আমাদানিকারক রয়েছেন এই বন্দরে। আর শ্রমিকের সংখ্যা দুই হাজারের বেশি। গত বছর গোবরাকুড়া-কড়ইতলি স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনে রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ৪২ কোটি টাকা।

আকন

Advertisement
Advertisement
Advertisement