
তিস্তানির্ভর ৫০ হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়েছেন
নাজমুল ইসলাম নিশাত , এখন টিভি
১৭ মার্চ ২০২৩, ১৯:০৫
প্রমত্তা তিস্তা এখন ধু-ধু বালুচর। নদীর বুকে বিরামহীন ছুটে চলা মাঝি-মাল্লাদের ব্যস্ততা থমকে গেছে। তিস্তাকে ঘিরে যে জনপদ গড়ে উঠেছে তাও আজ হুমকিতে। নদীনির্ভর অন্তত ৫০ হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়েছেন।
গবেষকরা বলছেন, তিস্তার অস্তিত্ব রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়া হলে হুমকিতে পড়বে জল ও স্থলের জীবনচক্র।
তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট এখন বন্ধ। যতটুকু পানি মিলছে তার বেশিরভাগই সেচ কাজে ব্যবহার হচ্ছে। ফলে তিস্তার ভাটি এলাকায় পানি নেই।
শুকিয়ে যাওয়া নদীর মাঝে একটি ছাউনিতে জাল ও পাতিল নিয়ে অপেক্ষায় কয়েকজন জেলে। রোদ কমলে ফেলা হবে জাল। তবে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় নেই মাছ। তাই সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে জেলেদের।
জেলেরা বলেন, তিস্তায় পানি না থাকায় আমরা মাছ ধরতে পারছি না। এজন্য বালুচরেই বসে আছি। আর যেটুকু মাছ ধরা যায়, তা দিয়ে পরিবার নিয়ে চলতে পারি না।
এছাড়া তিস্তায় নতুন আতঙ্ক আইপিএস ও কারেন্ট জাল। জেলেদের অভিযোগ, উজানে পানি আসলে একটি চক্র অবৈধ জাল দিয়ে মাছ ধরে। এতে করে মাছের পোনার পাশাপাশি ধ্বংস হচ্ছে বিভিন্ন জলজ প্রাণী।
নীলফামারী থেকে গাইবান্ধা পর্যন্ত ১১৫ কিলোমিটার নদী তীরবর্তী এলাকার কয়েক লাখ মানুষ তিস্তার ওপর নির্ভরশীল। তবে জীবন-জীবিকার জন্য সরাসরি তিস্তা থেকে সুবিধাভোগী দুই থেকে আড়াই লাখ জেলে ও মাঝি পরিবার। এছাড়া রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলার এক কোটির বেশি কৃষক এই নদীর পানি কৃষি কাজে ব্যবহার করেন।
রিভারাইন পিপলস-এর পরিচালক অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, লক্ষাধিক মানুষ তিস্তা পাড়ে বিপন্ন জীবনযাপন করে। যেটুকু পানি আছে, সেটুকুও শেষ হলে নদী ও নদীনির্ভর মানুষ মরবে। একইসঙ্গে নদীনির্ভর কৃষি অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এটি বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
এদিকে ভারত সরকার কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে তিস্তার উজানে খাল খনন করছে এমন অভিযোগে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ মানববন্ধন করেছে। শিগগিরই এই খাল খনন বন্ধ না হলে তিস্তার সাথে সাথে ধরলা নদীও হুমকিতে পড়বে।
এএইচ