
নওয়াব ফয়জুন্নেসার দান করা সম্পত্তি বেদখল
খালেদ সাইফুল্লাহ , এখন টিভি
১৬ মার্চ ২০২৩, ১৪:৫৪
প্রধান ফটকের পর দক্ষিণ দুয়ারি দোতলা ভবন। আর একপাশে বৈঠকখানা। পেছনে দোতলা রংমহল আর ঘোড়ার আস্তাবল।
ঔপনিবেশিক যুগের শিল্প নকশা বাড়িটি নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানির, বাঙালি নারী জাগরণের পথিকৃৎ। নান্দনিক শৈল্পিকতায় নির্মিত নবাব বাড়ি দক্ষিণ কুমিল্লার পর্যটনের কেন্দ্রবিন্দু।
ফয়জুন্নেসা ছিলেন একজন একাধারে জমিদার, নারী শিক্ষার প্রবর্তক, একজন সমাজসেবক এবং একজন কবি। যদিও তাঁর কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না, তবুও তিনি বাংলা, আরবি, ফারসি ও সংস্কৃত ভাষায় পারদর্শী ছিলেন।
অন্ধকার যুগের আলোর দিশারী এ মহীয়সী নারীকে নওয়াব উপাধি দিয়েছিলেন রানী ভিক্টোরিয়া।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন বলেন, ফয়জুন্নেছার জীবন ও কর্ম নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি চর্চা প্রয়োজন। তিনি যে বাড়িতে অবস্থান করছেন সেটি কুমিল্লার পর্যটন এলাকা হতে পারে।
বাড়ির আয়তন ৪ একর ৫৩ শতক। ১০৯ সালে তার মৃত্যুর আগে, ফয়জুন্নেসা তার সমস্ত সম্পত্তি মানব কল্যাণে দান করেছিলেন। তবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এখন অনেক সম্পত্তি খালি পড়ে আছে। তা মুক্ত করতে সামাজিক আন্দোলনও চলছে।
নওয়াব ফয়জুন্নেছা ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আজাদ সরকার লিটন বলেন, সামাজিক আন্দোলনের ভিত্তিতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সম্প্রতি ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণীর সম্পত্তি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরকে সংরক্ষণের দায়িত্ব দিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। বাড়িটি সংস্কার ও আধুনিকায়ন করে করা হবে উন্মুক্ত জাদুঘর ।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম ও সিলেটের আঞ্চলিক পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, আমরা ফয়জুন্নেছা ভবনের উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। আমাদের যাচাই-বাছাই ছাড়াই যে কেউ ভবন নেওয়ার চেষ্টা করলে আমরা ব্যবস্থা নিবো।
কুমিল্লা শহরের নবাব ফয়জুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, লাকসামের ফয়জুন্নেছা ডিগ্রি কলেজ এবং বিএন উচ্চ বিদ্যালয় ফয়জুন্নেসার বেসরকারি অর্থায়নে পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
এছাড়াও, তিনি ১৮৯৩ সালে মহিলাদের স্বাস্থ্যসেবায় নবাব ফয়জুন্নেছা মহিলা ওয়ার্ড প্রতিষ্ঠা করেন। যা বর্তমানে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের অধিভুক্ত। এ ছাড়া তিনি দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্র, পুল, সেতু, কালভার্ট ও মসজিদ নির্মাণ করেন
এসআই