Ekhon TV :: এখন টিভি

অটোরাইস মিলের প্রতিযোগিতায় বন্ধ অনেক চালকল

দুর্দিনে চালকল মালিকরা, কাজ হারিয়ে বিপদে বহু মানুষ

আব্বাস আলী , এখন টিভি

১৫ মার্চ ২০২৩, ১৪:৫১

শস্য ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত উত্তরের জেলা নওগাঁয় একসময় প্রচুর হাস্কিং মিল গড়ে ওঠে। তবে অটোরাইস মিলের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এসব চালকল। এতে কাজ হারাতে হয়েছে অসংখ্য শ্রমিককে। মালিকদের আশা মানুষের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন হলে ফের ঘুরে দাঁড়াবে হাস্কিং মিলগুলো। 

নওগাঁ সদর উপজেলার পাথরঘাটা গ্রামের আফাজ উদ্দিন। ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন হাস্কিং মিল। ব্যবসাও ছিলো জমজমাট। ব্যবসার পরিধি বাড়াতে ২০১৪ সালে ব্যাংক থেকে নিয়েছিলেন ঋণ। তার দাবি, ২০১৮ সালের পর অটোরাইস মিলের দাপটে ব্যবসায় ধস নামে। বন্ধ হয় অনেক চালকল।

আফাজ উদ্দিন আরও বলেন, ‘আগে অনেক ভালোই ছিলাম এখন অবস্থা খুবই খারাপ। এখন ধানের থেকে চালের দাম কম তাই আস্তে আস্তে এই ব্যবসা সবাই গুটিয়ে নিচ্ছে।’

শীর্ষ ধান উৎপাদনকারী জেলার মধ্যে অন্যতম নওগাঁয় ৮ বছর আগেও প্রায় এক হাজার ২০০ মিল ছিলো। উৎপাদন সক্ষমতাসহ নানাদিকে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেয়ে ৬০০ এর বেশি মিল বন্ধ হয়ে গেছে। যেগুলো টিকে আছে সেগুলোও বন্ধ হওয়ার উপক্রম।

পুরনো মিলে ধান থেকে চাল উৎপাদন করতে সময় লেগে যায় সপ্তাহখানেক। অটোরাইস মিলে কম সময়ে উৎপাদনের পরিমাণ আরও বেশি। তাই ব্যবসায়িক বিবেচনায় সকলেরই পছন্দ নতুন প্রযুক্তি।

জেলায় এ শিল্পে জড়িত ছিলেন ৫০ হাজারের বেশি লোক। তবে, অটোরাইস মিলগুলোতে স্বল্প শ্রমিক লাগায় কাজ হারাতে হয় অনেককে। দীর্ঘদিনের পেশা পরিবর্তনে বাধ্যও হয়েছেন শ্রমিকরা।

শ্রমিকরা বলেন, ‘আমাদের চাতাল মালিকরাই এখন বিপদে আছেন, আমাদের অবস্থাতো আরও খারাপ। এখানে বহু নারী পুরুষ এখন বেকার হয়ে গেছে।’

অটোরাইস মিলে উৎপাদিত চাল দেখতে ঝকঝকে ও সুন্দর। তবে, পুষ্টিগুণ ও স্বাদের দিক থেকে এগিয়ে হাস্কিং মিলের চাল। তাই মানুষের খাদ্যভাস পরিবর্তন হলে আবারও হাস্কিং মিলগুলো ঘুরে দাঁড়াবে এমনটাই আশা জেলা চালকল মালিক সমিতির।

নওগাঁ জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, ‘অটোরাইস মিলগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগীতায় টিকতে না পেরে ইতোমধ্যে অর্ধেকের বেশি চালকল বন্ধ হয়ে গেছে।’

জেলা চালকল মালিক সমিতির তথ্যানুযায়ী- জেলায় প্রায় ১৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়। এখানে চাহিদা মাত্র ৫ লাখ মেট্রিক টন। এদিকে, প্রতিদিন উৎপাদন হয় প্রায় ২ হাজার মেট্রিক টন চাল। উদ্বৃত্ত চাল বিক্রি হয় ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগের জেলায়। ৫০ হাজার টাকা মেট্রিক টন হিসেবে যার মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা।

আকন

Advertisement
Advertisement
Advertisement