Ekhon TV :: এখন টিভি

২০১০ সালে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠিত হয়। আর এই ১৩ বছরে ৮৮ হাজারের বেশি অভিযোগ দায়ের হয় সংস্থাটিতে। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে অভিযোগ আসছে ৬৬টি।

মুরাদ হাসান, কাজ করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। ২০১৫ সালের একটি ঘটনা নিয়ে তার সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৮ বছর আগে রাজধানীর একটি দোকান থেকে কোমল পানীয় কিনেন তিনি। ১৫ টাকার পণ্য কিনতে খরচ তখন দিতে হয়েছিলো ২০ টাকা। পরের ঘটনাটা তিনি বললেন এভাবে, দোকানদার আমাকে বললো আমাদের তো রিসিট নাই, ক্যাশ মেমো নাই। তখন আমি বললাম, সাদা কাগজে দোকানে সিল দিয়ে লিখে আমাকে একটা মেমো করে দেন। 

এরপর বাড়তি দাম দিয়ে কেনা কোমল পানীয় এর রিসিট নিয়ে ভোক্তা অধিকারে মামলা করেছিলেন মুরাদ হাসান। এবং সেই মামলায় জিতেও যান তিনি। ক্ষতিপূরণ হিসেবে পান জরিমানার একটি অংশ।  

মুরাদ হোসেনের মত অনেক ভোক্তাই মনে করেন, আগের চেয়ে এখন বেশি সচেতন তারা। সেবা পেতে সমস্যা হলে এখন নির্ভয়ে অভিযোগ করতে পারেন তারা।

একজন ভোক্তা বলেন, আগে আমাদের অভিযোগ জানানোর জায়গা ছিলো না, এখন হচ্ছে। তবে আমার মতে এই সংখ্যা আরও বাড়ানো উচিত। আর কঠোর নজরদারি রাখা উচিত। 

ভোক্তাদের অভিযোগের একমাত্র জায়গা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ২০০৯ সালে প্রণীত হয় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর আইন। 

১৯৬২ সালের ১৫ মার্চ মার্কিন কংগ্রেসে ভোক্তাদের অধিকার নিয়ে বক্তব্য দেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি। ঐতিহাসিক দিনটির স্মরণে ১৯৮৩ সাল থেকে প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে পালিত হয়ে আসছে দিবসটি। সারা বিশ্বের ভোক্তা সংগঠনগুলোর ফেডারেশন কনজ্যুমার ইন্টারন্যাশনাল-সিআই ভোক্তা অধিকার প্রচারণার একমাত্র সম্মিলিত কণ্ঠস্বর। সংগঠনটির সদস্য বিশ্বের ২৫০টি দেশ।

২০১০ সাল থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ জমা পড়েছে ৮৮,৯১৮ টি। এরমধ্যে অভিযোগ নিস্পত্তি হয়েছে ৮৩,৭৯৮ টি। এখন পর্যন্ত নিস্পত্তি হয়নি ৫,১২০টি অভিযোগ। 

২০২২ সালের ১লা জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভোক্তা অধিকারে অভিযোগ দায়ের হয়েছে ১৫,৬৮৮ টি। প্রতিদিন গড়ে অভিযোগ পড়েছে ৬৬ টি।  কর্তৃপক্ষ বলছে, এরমধ্যে প্রায় ৯৫ শতাংশ অভিযোগ নিস্পত্তি করা হয়েছে। 

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান এখন টিভিকে বলেন, মানুষ এখন প্রচুর অভিযোগ করছে। ই-কর্মাসের অভিযোগের ৪০ শতাংশ আমরা নিষ্পত্তি করেছি। আর এটা সময়েরও ব্যাপার। শুনানি করতে হয়, তাদের ডকুমেন্ট নিয়ে কাজ করতে হয়। 

এদিকে, দেশের একমাত্র ভোক্তা সংগঠন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাব কনজ্যুমার ইন্টারন্যাশনালের পূর্ণাঙ্গ সদস্য। ১৯৮৩ সাল থেকে ভোক্তাদের অধিকার নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে ক্যাব । তারা বলছে, ভোক্তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হলে সচেতন হতে হবে আরও বেশি।

ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, যে পরিমাণ বাংলাদেশে ভোক্তারা প্রতারিত হচ্ছে, সেই হিসেবে যে পরিমাণ অভিযোগ আসার কথা তা কিন্তু আসছে না। সামান্য সংখ্যক অভিযোগ করা হচ্ছে ভোক্তা অধিকারে। 

এছাড়াও জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কমিটিতে আরো লোকবল বাড়ানোর পরামর্শ দেন ক্যাব সভাপতি।

আরএন

Advertisement
Advertisement
Advertisement