
এবার রমজানে রাস্তার ভোগান্তি কমবে?
শাহরিয়ার জামান দীপ , এখন টিভি
১৩ মার্চ ২০২৩, ১৩:৫৩
রমজান মাস এলেই বাড়ে যানবাহনের চাপ, বাড়ে মানুষের চলাচল। তাতে নির্দিষ্ট মাপের সড়কের ওপর পড়ে বাড়তি চাপ। ফলে যানজট কিংবা যানবাহনের ধীর গতিতে রুদ্ধ হয় রাজপথ। একদিকে ইফতার অন্যদিকে মার্কেট কেন্দ্রিক যানজটে নাকাল হয় নগরবাসী। প্রতি বছরের চিত্র এমন হলেও এবার এ ধরণের অবস্থা থেকে পরিত্রাণের আশা ট্রাফিক বিভাগের। নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, সুস্পষ্ট পরিকল্পনা এবং কঠোর বাস্তবায়ন করতে পারলে অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব।
২০১৭ সালে ঢাকার যানবাহনের গতি ছিল ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার, সেখান থেকে নামতে নামতে এখন দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারে। যা প্রায় হাঁটার গতির সমান। ১৫ বছরে ঢাকায় যানজটের গতি কমেছে ১৬ কিলোমিটার। কর্মদিবসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহনে বসে ঘাম ঝরেছে যাত্রীদের।
রমজান আসলেই অবস্থা আরো ভয়াবহ হয়। বিশেষ করে ইফতারের আগের সময়টা সড়কে কোন গাড়িই চলে না। সবারই বাড়ি যাবার তাড়া শুরু হয়। এর সাথে যোগ হয় বিভিন্ন ইফতার সামগ্রীর দোকানে, শপিংমলে গাড়ির চাপ।
রোজার মাসে মানুষের চলাচলের সময়টা সীমিত হয়ে পড়ে। এর মধ্যে চালু থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কর্মক্ষেত্রও সচল। রাস্তার মোড়গুলোতে গাড়ি যেন আটকা না পড়ে সেদিকে বাড়তি নজর দেয়ার পরামর্শ নগরবিদদের।
নগর পরিকল্পনাবিদ আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, আমাদের ঢাকাবাসীর একটা বাস্তবতা মেনে নিতে হবে যে রমজানের সময় চাপ কিছুটা বাড়বে। আমাদের রাস্তার ধারন ক্ষমতা দিনকে দিন কমছে। এজন্য বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। যার মাধ্যমে শপিংমল বা অন্য কোথাও যেন একটা অবৈধ গাড়ি পাকিং করা না থাকে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে, তাহলেই কিন্তু রাস্তার ধারনক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব।
রমজানে দুপুর ২টার পর থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত গাড়ির চাপ বেশি থাকে। ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ বলছে, এই সময় যানবাহন নিয়ন্ত্রণ চ্যালেঞ্জিং। অন্যান্য বছরের অভিজ্ঞতায় ২টার আগে থেকে ইফতারের আগ পর্যন্ত ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।
ডিএমপির ট্রাফিক-দক্ষিণের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার এস এম মেহেদী হাসান বলেন, সকলেই চায় যে বাড়িতে ফিরে পরিবারের সাথে ইফতার করতে। সেটিকে মাথায় রেখে আমরা ওই সময়ে ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যাও বাড়িয়ে দিবো।
তিনি বলেন, সমস্য বিভিন্ন রকম। আমাদের সম্পদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আবার যেসকল যায়গায় শপিংমল তৈরি হয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি শপিংমল বাদ দিলে অধিকাংশেরই পাকিং ব্যবস্থা অনেক দূর্বল। সবকিছু মাথায় রেখেই আমরা ট্রাফিক পরিকল্পনা গ্রহন করছি।
রমজানকে কেন্দ্র ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রনে ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজ এবং নানা শ্রেনী পেশার মানুষের সাথে খুব শীঘ্রই সমন্বয় সভা করা হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
বুয়েটের এক গবেষণা বলছে, ১৫ বছরে রাজধানী ঢাকার সড়কে শুধু যানবাহন চলাচলের গড় গতি কমেছে তা নয়, এর সাথে যোগ হয়েছে কর্মঘন্টা। ঢাকায় যানজটের কারণে দৈনিক প্রায় ৮২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। অর্থমূল্যে যার পরিমাণ প্রায় ১৩৯ কোটি টাকার সমান। এ হিসাবে বছরে যানজটে ক্ষতির পরিমাণ দাড়ায় প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা।
এফএইচ