
বছরের প্রথম ৮ মাসে রপ্তানি বেড়েছে ৩২৩ কোটি ডলার
পোশাক ও চামড়া শিল্পে ভর করে বাড়ছে রপ্তানি আয়
আরিফ হোসেন , এখন টিভি
১৩ মার্চ ২০২৩, ১২:০৫
দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিচ্ছে রপ্তানি আয়। চলতি বছরের প্রথম ৮ মাসে রপ্তানি বেড়েছে ৩২৩ কোটি ডলার। অধিকাংশ খাতে রপ্তানি কমলেও তৈরি পোশাক ও চামড়া শিল্পের মাথায় ভর করে ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাব কাটাচ্ছে বাংলাদেশ। উৎপাদন বান্ধব পরিবেশ তৈরি করলে ১০০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি হবে শুধু পোশাক খাতে আশা ব্যবসায়ীদের। পিছিয়ে পড়া রপ্তানি খাত গুলোর সমস্যা খুঁজে পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ অর্থনীতি বিদদের।
করোনা প্রভাবে টালমাটাল বিশ্ব অর্থনীতির সব থেকে বড় ধাক্কা ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ। বিশ্ব বাজারে দাম বাড়ে অধিকাংশ পন্যের। যার প্রভাবে বাড়ে দেশের আমদানি খরচ। ব্যাংক ও খোলাবাজারে ডলারের সংকট তৈরি হয়। ডলারের দাম ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। সেই সংকটকে গত সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে আরও উসকে দেয় প্রবাসী ও পণ্য রপ্তানি আয়ের নিম্নগতি। নভেম্বর থেকে অবশ্য পণ্য রপ্তানি আয় ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম আট মাস জুলাই-ফেব্রুয়ারিতে সামগ্রিক পণ্য রপ্তানিতে ৯.৫৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ৭০৮ কোটি ডলারের পণ্য।
গত ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট ৫ হাজার ২০৮ কোটি ডলার মূল্যের রেকর্ড পরিমাণ পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে প্রথম আট মাসে রপ্তানি হয় ৩ হাজার ৩৮৪ কোটি ডলারের পণ্য।
চলতি অর্থবছরের একই সময়ে এর চেয়ে বেশি রপ্তানি হওয়াটা বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্বস্তিদায়ক হলেও অধিকাংশ খাতেরই রপ্তানি কমছে। খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে হিমায়িত খাদ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, হোম টেক্সটাইল, পাট ও পাটজাত পণ্য, কার্পেট, বিশেষায়িত টেক্সটাইল, প্রকৌশল পণ্য, হস্তশিল্প, আসবাব, কাঁচ পণ্য।
তৈরি পোশাকের মতো চামড়া, প্লাস্টিক পণ্য, চামড়াবিহীন জুতার রপ্তানি বাড়ছে। কাপড় ও সরঞ্জামের উচ্চমূল্যের কারণে তৈরি পোশাক রপ্তানির পরিমাণ বাড়ছে, কিন্তু পোশাকের সংখ্যা বাড়ছে না। অনেক কারখানা এখনো উৎপাদন সক্ষমতার মাত্র ৬০-৭০ পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারছে। তবুও ২০২৪ সালে রেকর্ড রপ্তানির আশা করছে খাত সংশ্লিষ্টরা।
বিকেএমইএ‘র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, এখন যে বিশ্ব মন্দা চলছে এটা যদি চলমান থাকে বা রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ যদি চলতে থাকে তাহলেও যে চাহিদাটা আসবে তার বেশিরভাগই বাংলাদেশে আসবে। কেননা যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে চায়নার যে বানিজ্য যুদ্ধ চলছে এটা আরো প্রকট আকার ধারন করবে।
তিনি আরো বলেন, নানা প্রকার সংকট ও সমস্যায় এখন আমরা জর্জরিত। এই সমস্য যাদি আমরা মোকাবেলা করে টিকে থাকতে পারি তাহলে কিন্তু ২০২৪ সাল ভালো যাবে বলে আমরা আশা করছি।
অর্থনীতিবিদরা বলছে কেবল পোশাক ও চমড়া খাত দিয়ে বিবেচনা করলে হবে না। পিছিয়ে পড়া রপ্তানি খাত গুলোর সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান দেয়ার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।
অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির বলেন, আরএমজির পাশাপাশি অন্যান্য সেক্টরের দিকেও আমাদের নজর দিতে হবে।এটি যদি আমরা বাড়াতে পারি তাহলে আরএমজির ওপর যে একক নির্ভরতা সেটি কমে যাবে এবং আমাদের যে অনিশ্চয়তা এর থেকে আমরা কিছুটা হলেও পরিত্রান পাবো।
টানা তিন মাস সামগ্রিকভাবে ৫০০ কোটি ডলারের বেশি পণ্য রপ্তানি হলেও সদ্যবিদায়ী ফেব্রুয়ারিতে তা কমেছে। রপ্তানি হয়েছে ৪৬৩ কোটি ডলারের পণ্য। তবুও রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ৭.৮১ শতাংশ।
এফএইচ