
চট্টগ্রামে ২০০ কোটি টাকায় হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ বার্ন ইউনিট
ফায়সাল করিম , এখন টিভি
১০ মার্চ ২০২৩, ১২:২৩
চট্টগ্রামে আগুনে পোড়া রোগীদের জন্য এতোদিন পূর্ণাঙ্গ বার্ন ইউনিট ছিলো না। জীবন বাঁচাতে রোগী আর স্বজনরা রাজধানীতে ছুটে যেতেন। তবে স্বাধীনতার ৫২ বছর পর চট্টগ্রামে সেই সংকট কাটছে। চীনের সহায়তায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫০ শয্যার বার্ন ইউনিট নির্মাণের কাজ শুরু হচ্ছে।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোতে আগুনের ঘটনায় দগ্ধ রোগীদের সামলাতে হিমশিম খেয়েছিলো চট্টগ্রাম মেডিকেলের বার্ন ইউনিট। গুরুতর আহত ২২ রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠাতে হয়েছিলো। বাকিদের চিকিৎসার জন্য মেঝেতেও জায়গা হয়নি, ঠাঁই হয়েছিলো অন্যান্য ওয়ার্ডে।
শিল্প ও বাণিজ্যের কেন্দ্র চট্টগ্রামে এ ধরনের ছোট-বড় অগ্নি দুর্ঘটনা বহুবার ঘটেছে। আর উন্নত চিকিৎসার অভাবে মারা গেছে অনেকে।
চট্টগ্রামই নয়, আশপাশের বহু জেলা-উপজেলা মিলিয়ে অন্তত চার কোটি মানুষের ভরসা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ২৬ শয্যার বার্ন ইউনিট। যেখানে কখনও কখনও শতাধিক রোগী ভর্তি থাকে। ফলে রোগীদের ঠাঁই হয় মেঝে কিংবা বারান্দায়। কখনো বাধ্য হয়ে পাশের ওয়ার্ডেও রোগী স্থানান্তর করতে হয়। আর রোগীর অব্স্থা সংকটাপন্ন হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠাতে হয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের এখন জনবল ও স্থানের সংকট সবচেয়ে বেশি। স্থানের অভাবে আমরা রোগী রাখতে পারি না। ২৬ শয্যার একটি ইউনিটে সবসময় ৬০-৭০ জনের বেশি রোগী থাকে।
বড় বড় দুর্ঘটনা প্রতিবারই একটি পূর্ণাঙ্গ বার্ন ইউনিটের কথা চট্টগ্রামকে মনে করিয়েছে। এ বিষয়ে পরিকল্পনাও কম হয়নি, কেবল জায়গা বরাদ্দের দীর্ঘসূত্রিতায় বারবার কোটি মানুষের স্বপ্ন পিছিয়েছে। তবে এবার জায়গা মিলেছে। হাসপাতালের অদূরে গোয়াছি বাগান এলাকায় এক একর জায়গা চূড়ান্ত হয়েছে। চীন সরকারের অর্থায়নে এখানে শিগগিরই শুরু এ প্রকল্প। এরইমধ্যে নকশাসহ বিভিন্ন প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। সম্প্রতি শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের জাতীয় সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন প্রকল্পের অগ্রগতি দেখতে আসেন।
তিনি বলেন, আমরা চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে এসেছি। চীনের পক্ষ থেকে এখানে একটি পূর্ণাঙ্গ বার্ন ইউনিট স্থাপন হবে। এটা হলে অগ্নি দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের আর ঢাকায় যেতে হবে না।
চিইউয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন মুখপাত্র লিও বো বলেন, ছয় তলা বিশিষ্ট ১৫০ শয্যার বার্ন ইউনিট হবে। প্রতি ফ্লোরে ১৬ হাজার বর্গফুট স্পেস থাকবে। এখানে ১০টি আইসিইউ বেড থাকবে এবং ২৫টি এইচডিইউ বেড থাকবে।
প্রকল্প এলাকার তিন শতাধিক অবৈধ স্থাপনা সরাতে বাসিন্দাদের ২০ মার্চ পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কাজ শুরু করে আগামী দুই বছরের মধ্যে সেবা দেয়ার আশা কর্তৃপক্ষের।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, কাজের বিভিন্ন স্তর রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক স্তর সম্পন্ন হয়েছে।
আগামী ১৩ মার্চ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ইআরডি’র সাথে চীনা কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরের কথা রয়েছে। এরপরই কাজ শুরু হবে।
এএইচ