Ekhon TV :: এখন টিভি

ফেরিঘাট উদ্বোধনের অপেক্ষায় নেত্রকোণার হাওরবেষ্টিত খালিয়াজুরী উপজেলার লাখো মানুষ। ফেরি চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে গতি আসবে। ফলে স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি রাজস্ব আদায় বাড়বে। এদিকে নদীর দুই পাড়ে ঘাট নির্মাণের কাজ ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। 

নেত্রকোণা জেলা থেকে খালিয়াজুরী উপজেলাকে বিচ্ছিন্ন করেছে ধনু নদী। বছরের বেশিরভাগ সময় অনেক জায়গা হাওরের পানির নিচে থাকায় উপজেলাটির অভ্যন্তরে কোনো ভারি যানবাহন চলাচল করে না। ফলে পণ্য পরিবহণ ও যাতায়াতে নৌকা এই এলাকার বাসিন্দাদের একমাত্র ভরসা।

এছাড়া নদীতে কোনো সেতু বা ফেরি না থাকায় হাওরের মাছ ও উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকরা। অসুস্থ কাউকে জরুরিভিত্তিতে জেলা সদর হাসপাতালে নিতেও ভোগান্তি পোহাতে হয়।

স্থানীয়রা বলেন, সন্ধ্যার পর নৌকায় আর চলাচল করা যায় না। আর অসুস্থ কাউকে হাসপাতালে নিতেও ভোগান্তির শিকার হই। ফেরি চলাচল না থাকায় আমাদের ভোগান্তি আরও বাড়ছে। 

সম্ভাবনাময় হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে থমকে আছে হাওর অঞ্চলের অর্থনীতি। এখানে চলতি মৌসুমে ২০ হাজার হেক্টর জমিতে ৭৫ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে। যার বাজার মূল্য ৩২০ কোটি টাকা। কিন্তু সরাসরি নদী পারাপারের সুবিধা না থাকায় ১০০ থেকে ২০০ টাকা কমে প্রতি মণ ধান বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের।

কৃষকরা বলেন, হাওর অঞ্চলে আমরা ধান চাষ করেই বেঁচে আছি। আমাদের আর কোনো ফসল নেই। সেই ধান বিক্রি করেও আমরা ন্যায্য মূল্য পাই না। আবার মাথায় করে ধান নিয়ে এসে কম দামে ধান বিক্রি করতে হয়।

ফেরি চালু হলে ধান বিক্রি করেই প্রতি মৌসুমে ১৫০ কোটি টাকা অতিরিক্ত আয় করতে পারবেন বলে মনে করেন কৃষকরা। এছাড়া শীত মৌসুমে উৎপাদিত ৪ কোটি টাকার সবজি বিক্রি করে আসবে বাড়তি টাকা।

বাসিন্দারা বলেন, এই নদীর কারণে অনেকে উৎপাদিত পণ্য সরাসরি বেচাকেনা করতে পারে না। ফেরি চলাচল শুরু হলে মাল সরাসরি আসবে। এতে করে ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি রাজস্ব আদায় বাড়বে। 

স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে ধনু নদীতে নতুন ফেরির ব্যবস্থা করেছে সড়ক বিভাগ। বর্তমানে নদীর দুই পাড়ে চলছে ঘাট নির্মাণের কাজ। ইতোমধ্যে নির্মাণকাজের ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। 

সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার শরীফ খান বলেন, ফেরি চলাচলের জন্য আমাদের কাজ চলছে। আগামী মাস থেকেই ফেরি চলাচল করবে।

পাশের জেলা হলেও নেত্রকোণার সাথে সুনামগঞ্জের সরাসরি সংযোগ নেই। ধনু নদীতে ফেরি চলাচল শুরু হলে সুনামগঞ্জ ও সিলেটের সাথে যুক্ত হবে নেত্রকোণা। এতে যেমন অর্থ সাশ্রয় হবে তেমন পাল্টে যাবে হাওর পাড়ের অর্থনীতি।

এএইচ

Advertisement
Advertisement
Advertisement