
‘৫০ শতাংশ পণ্য পরিবহন করবে দেশীয় জাহাজ’
হাজেরা শিউলি , এখন টিভি
০১ মার্চ ২০২৩, ২০:০৯
দেশীয় জাহাজে ৫০ শতাংশ পণ্য পরিবহনের আইন কার্যকর করা নিয়ে ক্ষুব্ধ বিদেশি জাহাজ মালিকরা। এদিকে শিপিং এজেন্টদের অভিযোগ ওয়েবার সনদ পেতে দেরি হওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য নিয়ে ভিড়তে পারছে না অনেক জাহাজ। এ অবস্থায় অনেক শিপিং লাইন এই রুটে সার্ভিস বন্ধের কথা ভাবছে।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সিঙ্গাপুর, কলম্বো ও পোর্টকেলাংসহ বিভিন্ন ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দরে কনটেইনারে পণ পরিবহন করে ৯০টি জাহাজ। এর মধ্যে দেশীয় পতাকাবাহী কনটেইনার জাহাজ মাত্র ৮টি। মোট পণ্যের মাত্র সাত শতাংশ পরিবহন করে দেশীয় জাহাজ। বাকী ৮২ টি জাহাজ বিদেশী মালিকানাধীন, যা পরিবহন করে ৯৩ শতাংশ। যেসব শিপিং কোম্পানির কনটেইনার ও জাহাজ দুটোই আছে সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনের বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করছে তারাই।
দেশীয় পতাকাবাহী জাহাজ সুরক্ষা আইন অনুযায়ী সমুদ্রপথে পরিবাহিত পণ্যের ৫০ শতাংশ পরিবহন করবে দেশীয় জাহাজ। এক্ষেত্রে বন্দরে বাংলাদেশী কোন জাহাজ থাকলে, তাদের সম্মতি ছাড়া পণ্য পরিবহনের অনুমতি পাবেনা বিদেশী ফিডার জাহাজ। ২০১৯ সালে এই আইন করা হলেও এতদিন বিধিমালা না থাকায় প্রয়োগ ছিল না।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি পতাকাবাহাী জাহাজের স্বার্থ সুরক্ষা বিধিমালার প্রজ্ঞাপন জারির পর আইন কার্যকর শুরু হলেই বাধে বিপত্তি। বর্তমানে ডলার সংকট ও এলসি জটিলতায় আমদানি কমে যাওযায় জাহাজের তুলনায় পণ্য কম। এক্ষেত্রে দেশীয় জাহাজ প্রাধান্য পাওয়ায় নাখোশ বিদেশী জাহাজ মালিকরা।
নৌ বাণিজ্য অধিদপ্তরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন সাব্বির মাহমুদ বলেন, ‘আমরা গুরুত্ব দিতে চাই দেশীয় পতাকাবাহী জাহাজ যাতে কার্গো পায়।’
একমুখী পণ্য পরিবহনের অনুমতি দেয়ার অভিযোগ করে শিপিং এজেন্টরা বলছে, এভাবে জাহাজ চালানো সম্ভব নয়। কোন কোন সময় ওয়েবার পেতে ১৫ দিন পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে । দেশীয় জাহাজের ৫০ শতাংশ পণ্য পরিবনের সক্ষমতা নেই দাবি করে, আগের মতোই ওয়েবার দেয়ার দাবি তাদের। অন্যথায় চট্টগ্রাম বন্দরের রুট প্রত্যাহার করবে অনেক ফিডার অপারেটর।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়শনের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, ‘তারা যদি দেখে বাংলাদেশে তাদের জাহাজ বসে থেকে ২০ থেকে ৪০ হাজার ডলার প্রতিদিন লোকসান গুনছে তখন তাদের এই জাহাজগুলো সরিয়েও নিতে পারে।’
সারা বিশ্বেই দেশী জাহাজ বিশেষ সুবিধা পেয়ে থাকে, জানিয়ে সংশ্লিস্টরা বলছেন, নুতন আইন কার্যকর হওয়ায় দেশীয় জাহাজকে আর অলস বসে থাকতে হবে না। অন্যদিকে জাহাজ ভাড়া বাবদ বিদেশী মুদ্রার বড় অংশ দেশেই থাকবে।
নৌ বাণিজ্য অধিদপ্তর বলছে, পারস্পারিক সমঝোতা ও কার্গো শেয়ারিংয়ের চুক্তির মাধ্যমে দুপক্ষের স্বার্থ সুরক্ষা সম্ভব।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহনকারী মেইনলাইন অপারেটর অধীনে রয়েছে ৬০টি জাহাজ। যাদের জাহাজ ও কনটেইনারে দুটোই আছে। বাকী ৩০টি ফিডার অপারেটরের শুধু জাহাজ আছে।
আকন