Ekhon TV :: এখন টিভি

মাসব্যাপী বইমেলার শেষে লেখক-পাঠক-প্রকাশকের মিলনমেলা ভাঙার দিন ছিলো মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি)। দীর্ঘ ২৮ দিন বইমেলার আয়োজন ছিলো এবার।

ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে বই কিনছিলেন কাওসার আহমেদ। সন্তানরাও দেখছিলো পছন্দের বই। শেষদিন বলেই কেনার সুযোগ হাতছাড়া করেননি তারা। কাওসার আহমেদের ছেলে বললো, এই বইমেলা থেকে ৪-৫টা বই কিনেছি। সামনের বছর আবার আসবো। নতুন বই কিনে পড়বো।

প্রাণের মেলার শেষদিনে ছিল উপচেপড়া ভিড়। পছন্দের বই কিনতে স্টলে স্টলে ভিড় করতে দেখা যায় পাঠক-দর্শনার্থীদের।

আরেকজন ক্ষুদে পাঠক বলেন, আমার ভূতের বই ভালো লাগে। রহস্য, ক্রাইমের ঘেরা গল্প আমার ভালো লাগে। সেই বইগুলোই কিনছি। 

প্রকাশকরা বলছেন, দর্শানার্থীদের আনাগোনা যতো বেশি বিক্রির পরিমাণ ঠিক ততোটা নয়। সময় প্রকাশনের প্রকাশক ফরিদ আহমেদ এখন টিভিকে বলেন, প্রকাশকদের কাছে ব্যাপক প্রত্যাশাময় থাকে অমর একুশে বইমেলা। এই সময়টাকে উপভোগ করি আমরা। তবে বাণিজ্যিক দিক থেকে এই বছর প্রকাশকরা খুব বেশি সন্তুষ্ট হয়েছে বলে আমার মনে হচ্ছে না। 

বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেনের কন্ঠে ছিলো এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়। তিনি বলেন, আগামী প্রজন্ম তৈরি হবে এবং তাদের মাধ্যমে আমরা স্বপ্নের জায়গা ধারণ করি। আমাদের বইমেলাকে বিশ্বের দরবারে একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে উপস্থাপন করবো।

এবারের বইমেলায় প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৩,৭৩০টি। টাকার অঙ্কে বিক্রির পরিমাণ প্রায় ৪৭ কোটি টাকা। আর দর্শনার্থী এসেছে প্রায় ৬৩ লাখের বেশি।

সমাপনী অনুষ্ঠানে এবারের বইমেলার সার্বিক বিষয় তুলে ধরে আয়োজক কমিটি। আগামীতে আরও সুশৃঙ্খলভাবে মেলা আয়োজনের প্রত্যাশার কথা জানান মেলা কমিটির সদস্য সচিব মোজাহিদুল ইসলাম। 

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, বইমেলা শুধু বই বিক্রির জায়গা নয়, আবেগ ও অনুভূতির জায়গা। এবার মেলায় যেটুকু দুর্বলতা ছিল ভবিষ্যতে তা কাটিয়ে ওঠার আশ্বাস দেন তিনি। বলেন, ব্যবসার কথা আমি বলবো না। কিন্তু প্রকাশক-লেখক-পাঠক সবার মনের খোরাক যোগায় এই মেলা। 

বইমেলার শেষদিনে বিভিন্ন গুণীজনের নামে পুরস্কার দেয়া হয়। মানসম্মত সর্বাধিক গ্রন্থ প্রকাশের জন্য আগামী প্রকাশনী-কে দেয়া হয় চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার। শৈল্পিক বিচারে সেরা গ্রন্থের জন্য মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছে তিনটি প্রকাশনীকে। 'বিচ্ছিন্ন ভাবনা' গ্রন্থের জন্য জার্নিম্যান বুকস এবং 'বাংলা একাডেমি আমার বাংলা একাডেমি' গ্রন্থের জন্য পুরস্কার পেয়েছে ঐতিহ্য।

এছাড়া 'ঠার বেদে জনগোষ্ঠীর ভাষা' গ্রন্থের জন্য পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স এবং সর্বাধিক শিশুতোষ গ্রন্থ প্রকাশ করে রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার জিতে নেয় ময়ূরপঙ্খী।

নান্দনিক অঙ্গসজ্জায় সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার পেয়েছে উড়কি, নবান্ন ও পুঁথিনিলয়।

বাঙালির প্রাণের মেলার জন্য বইপ্রেমীদের অপেক্ষা করতে হবে আরো এক বছর। তবে এই অপেক্ষা যেন শুধু বেদনার নয়; গল্প হয়ে পাঠক হৃদয়ে জাগাবে সুখের অনুভূতি।

আরএন

Advertisement
Advertisement
Advertisement