
মৌসুম নয় অথচ নদীতে জাল ফেললেই ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ

মৌসুম নয় অথচ নদীতে জাল ফেললেই ধরা পড়ছে মাছ
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৫:৫২
ইমতিয়াজুর রহমান , এখন টিভি
ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়ায় ঝাঁকে ঝাঁকে মিলছে মাছ। জমজমাট হাট-বাজার। অবৈধ জাল অপসারণের কয়েক মাসের মধ্যেই মিলছে সুফল। অবৈধ দখলমুক্ত করে মাছের আবাসস্থল, প্রজননক্ষেত্র ও খাবার নিশ্চিত করতে পারায় উৎপাদন বাড়ছে বলে জানায় মৎস্য বিভাগ। তবে ইলিশসহ নদীর মাছের উৎপাদন বাড়াতে অবৈধ কারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখার দাবি মৎস্যজীবী নেতাদের।
মৌসুম নয় অথচ নদীতে জাল ফেললেই ধরা পড়ছে ইলিশ, পোয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। গত বছর এই সময়েও ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়ায় নদীতে এমন মাছের দেখা মেলেনি। তবে এ বছর চিত্র কিছুটা ভিন্ন।
মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীর প্রবেশ পথগুলোতে অবৈধ ছোট ফাঁসের বেহুন্দি, চরঘেরা, পাইজাল, বেড়জাল, খুঁটিজাল দিয়ে মাছের চলাচল বন্ধ করে রেখেছিল প্রভাবশালী মাছ ব্যবসায়ীরা। এছাড়া নদীর মধ্যবর্তী ১০৯টি ডুবোচরে নিষিদ্ধ মশারী ও চরঘেরা জাল দিয়ে করা ছির জবর দখল। নিষিদ্ধ এসব জাল দিয়ে হাতেগোনা কিছু মানুষ লাভবান হলেও বছরের পর বছর মাছের ঋণের জালে জড়িয়ে দিন কাটাতে হয়েছে দরিদ্র জেলেদের।
সম্প্রতি মৎস্য বিভাগ এসব অবৈধ জাল অপসারণ করে জেলেদের জন্য নদী উন্মুক্ত করে দেয়। এর সুফলও পেতে শুরু করেছে মৎস্যজীবীরাও। এবার ভরা মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত মাছের দেখা না পাওয়ায় অভাব অনটনে কেটেছে জেলে পল্লীর বাসিন্দাদের। কিন্তু এই শীতের মধ্যেও অনেক বেশি মাছ ধরা পড়ায় সংকট কাটিয়ে লাভের মুখ দেখছেন তারা।
এক মাছ ব্যবসায়ী জানান, নভেম্বর-ডিসেম্বরে কোন মাছ ছিলো না। তবে জানুয়ারির শুরু থেকেই মাছ মোটামুটি ভালোই পাওয়া যাচ্ছে।
এক জেলে বলেন, এরকম মাছ যদি পাওয়া যায় তাহলে কিছু দেনা শোধ করতে পারবো।
নিষিদ্ধ জালের বিরুদ্ধে অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে ভবিষ্যতে এ ধারা অব্যাহত রাখার দাবি মৎস্যজীবী নেতাদের।
জেলা মৎস্য বিভাগ মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকা থেকে এ পর্যন্ত ২,৬০০ বিভিন্ন ধরনের অবৈধজাল ও ২৫০ লাখ মিটার কারেন্টজাল অপসারণ করেছে। এর সুফল প্রকৃত জেলেরা পাবেন বলে আশা মৎস্য বিভাগের।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ বলেন, অবৈধ জাল নির্মূল করার জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। শুধু অভিযানই নয়, আমরা নিয়মিত ফলোআপও করি। নদীতে আমরা নিয়মিত পাহারার ব্যবস্থা করেছি।
ভোলায় প্রায় দুই লাখ জেলে নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। চলতি বছর জেলায় ১ লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন ইলিশের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে দশ কোটি টাকা।
এমএস