Ekhon TV :: এখন টিভি

আমরা যে সবজি খাচ্ছি সেটি বিষমুক্ত কি না তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। বিভিন্ন গবেষণায় মানবদেহে কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব প্রকাশ পেয়েছে। বিভিন্ন রোগ এমনকি ক্যান্সার। তাই নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে এবার সারাদেশের ২০টি ইউনিয়নে বিষাক্ত সবজি চাষের প্রকল্প শুরু হয়েছে। এমনই একটি ইউনিয়ন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বারইয়ারধলা ইউনিয়ন।

মো. মনসুর আলম প্রায় ২০ বছর কৃষি কাজে যুক্ত তিনি। এবার তার ১৫ শতক জায়গা নেট দিয়ে ঘিরে চলছে বিষমুক্ত বেগুন উৎপাদন। আগে পোকা দমনে রাসায়নিক ব্যবহার করলেও এখন প্রাকৃতিক কৌশলের ব্যবহার করছেন তিনি। যে পদ্ধতি আগে কখনো চাষ করেননি তিনি।

কৃষক মো. মনসুর বলেন, খেতে জাল দেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের পোকামাকড়ের সমস্যা হয়নি। এই পদ্ধতিতে ফসলের ভালো ফলন পাওয়া যায়।

সীতাকুণ্ডের ১০০ একর জমিতে চলছে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনের এ প্রকল্প। চাষ হচ্ছে বেগুন, শিম, লাউসহ বেশ কিছু সবজি। আগে মৌসুমে প্রায় ৬০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকার কীটনাশক ব্যবহার করতে হলেও এখন খরচ হয় ২ হাজার টাকা। উৎপাদিত এসব ফসলের ব্যয় অনেক কম, অন্যদিকে বাজারে চাহিদাও বেশি। বাড়তি দামে এসব সবজি কিনছেন স্থানীয়রা।

এটি হলুদ আঠালো ফাঁদ নামে পরিচিত। যা আমদানি নির্ভর। তবে একই কার্যকরিতার একটি ফাঁদ নিজেরাই তৈরী করছেন এখানকার কৃষি কর্মকর্তারা। এর পাশাপাশি কৃষকদের প্রশিক্ষণও দেয়া হচ্ছে। কিছু পোকা হলুদ রঙের প্রতি আকৃষ্ট হয়, আর কিছু পোকা নীল রঙে। তাই আমদানি করা আঠালো ফাঁদের পাশাপাশি দেশিয় প্রযুক্তিতে তৈরী করা হয়েছে বিশেষ এ ফাঁদ। যেখানে ভেতর প্রবেশ করলেই পানির ফাঁদে আটকে পড়ে পোকারা।

আমদানি করা হলুদ ফাঁদ কিনতে ব্যয় হয় ৩০ টাকা এবং দেশীয় ফাঁদ তৈরিতে ব্যয় হয় ১৫ টাকা। এবার এসব প্রযুক্তি কৃষি অফিস থেকেই সরবরাহ করা হয়েছে। এর বাইরে দেয়া হচ্ছে জৈব সার।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, আমরা পুরো ইউনিয়নের ৫ শতাধিক কৃষককে জৈব সার ও বীজ সরবরাহ করেছি। তারা বীজ থেকে চারা তৈরি করছে। এবং আমরা তাদের পর্যাপ্তভাবে ফাঁদ ব্যবহার করতে সক্ষম হওয়ার জন্য তাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি।

বাজারে থরে থরে সাজানো টাটকা সবজি। দেখতে তাজা এসব সবজির চাহিদাও বেশ। সবজি উৎপাদন আর পোকা দমনে প্রতিনিয়ত শত রকম ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করছেন কৃষকরা। তাই কোনটি কতোটা নিরাপদ তা দেখে বোঝার উপায় নেই।

বিশ্বে সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশের অব্স্থান তৃতীয়। সামনে আছে চীন এবং ভারত। বাংলাদেশ বছরে উৎপাদন করছে ১ কোটি ৬০ লাখ টন সবজি, যার বড় একটি অংশ নষ্ট হয় পোকার আক্রমণে। আবার কীটনাশকের কারণে বিদেশে সবজি রপ্তানি করা যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে বিষমুক্ত সবজি চাষ একটি বড় সম্ভাবনা তৈরি করবে।

এসব সবজি চাষের জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে দিতে শুধু উৎপাদন নয়, বিপণনেও কৃষকদের সহায়তার কথা বলছেন, কৃষি কর্মকর্তারা।

বর্তমানে দেশে ১ কোটি ৬২ লাখ কৃষক পরিবার রয়েছে। যারা বছরজুড়ে উৎপাদন করছেন ৬০ ধরনের সবজি।

এসআই

Advertisement
Advertisement
Advertisement

এই সপ্তাহের সর্বাধিক পঠিত গুরুত্বপূর্ণ কৃষি খবর